সরকার পতনের আগের রাতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে শেখ হাসিনার কাছে খবর পাঠানো হচ্ছিল, পরদিন ৫ আগস্ট লাখ লাখ মানুষ ঢাকার রাজপথে নেমে আসবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সামর্থ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর থাকবে না, এমন ইঙ্গিতও ছিল গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোতে। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও আসন্ন পরিস্থিতির কথা জানিয়েছিলেন।

কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতা ধরে রাখতে ছিলেন অনড়। তিনি আরও রক্তপাত ঘটিয়ে হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাহিনীগুলোকে চাপ দেন। ৪ আগস্ট অনেক রাত পর্যন্ত তিনি আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে ব্যবহারের চেষ্টায় ছিলেন।

পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) জবানবন্দি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, গোয়েন্দা প্রতিবেদন এবং গণভবনে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে গত বছর ৪ ও ৫ আগস্টের শেখ হাসিনার কার্যক্রম ও পরিকল্পনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সরকার পতনের সব ধরনের বাস্তবতা থাকার পরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে চাননি। বরং আগের দিন এ প্রসঙ্গ ওঠায় ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তিনি। দেশ ছেড়ে পালানোর আগের রাতেও বলেছিলেন, যেকোনোভাবেই হোক আন্দোলন দমন করতে হবে।

কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতা ধরে রাখতে ছিলেন অনড়। তিনি আরও রক্তপাত ঘটিয়ে হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাহিনীগুলোকে চাপ দেন। ৪ আগস্ট অনেক রাত পর্যন্ত তিনি আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে ব্যবহারের চেষ্টায় ছিলেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের আগের দিন ৪ আগস্টকে ‘ভয়ংকর ও উত্তেজনাপূর্ণ’ বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক শুনানিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আমরা চেষ্টা করেছি সরকারকে সঠিক তথ্য দিতে। সরকার তার দুর্বলতা শুনতে প্রস্তুত ছিল না। এই মিটিংয়ে থাকা অবস্থায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে থাকে ও বিভিন্ন স্থানে সমস্যা দেখা দেয়। পরে বৈঠক মুলতবি হয়।তৎকালীন আইজিপি ও বর্তমানে কারাবন্দী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের জবানবন্দি

তৎকালীন আইজিপি ও বর্তমানে কারাবন্দী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে দেওয়া এক জবানবন্দিতে বলেছেন, ৪ আগস্ট দিনে ও রাতে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে গণভবনে শেখ হাসিনা দুই দফা বৈঠক করেছিলেন। এর মধ্যে বেলা ১১টায় আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজে, তিন বাহিনীর প্রধান, তৎকালীন আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ নিরাপত্তা-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক হয়। আন্দোলন পরিস্থিতি এবং তা দমন করার বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বলা হয়, গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসেছে আন্দোলন গুরুতর পর্যায়ে চলে গেছে। তা দমন করা প্রয়োজন।

সাবেক এই আইজিপি জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি সরকারকে সঠিক তথ্য দিতে। সরকার তার দুর্বলতা শুনতে প্রস্তুত ছিল না। এই মিটিংয়ে থাকা অবস্থায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে থাকে ও বিভিন্ন স্থানে সমস্যা দেখা দেয়। পরে বৈঠক মুলতবি হয়।’

পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) জবানবন্দি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, গোয়েন্দা প্রতিবেদন এবং গণভবনে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে গত বছর ৪ ও ৫ আগস্টের শেখ হাসিনার কার্যক্রম ও পরিকল্পনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে।হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনার পলায়নের দৃশ্য। ৫ আগস্ট ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ন র আগ র পর স থ ত তৎক ল ন ৫ আগস ট ৪ আগস ট আইজ প পতন র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মামলা করলেন ঢাবির সেই শিক্ষিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষিকার এডিটেড ও ‘আপত্তিকর’ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা শেহরীন আনিম ভূঁইয়া মোনামী সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামালাটি করেন।

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদ মনসুর রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন আসামি মুজতবা খন্দকার সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট। মুজতবা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শিক্ষিকার ছবি অশালীনভাবে এডিট করে পোস্ট করেন এবং ক্যাপশনে লেখেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইনি, পোশাকের স্বাধীনতায় পরেছে বিকিনি।”

এছাড়া আরো তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এজাহারে। মামলায় বেশ কিছু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে, যারা এই ছবি ও তথ্য ছড়াতে সাহায্য করেছেন।

ঢাকা/এমআর/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ