যদি নিজের স্মার্টফোনে এখনও ‘ট্রু কলার’ না থাকে, তাহলে নিরাপত্তার প্রয়োজনে গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে অ্যাপটি ইনস্টল করতে হবে।
নিজের ব্যবহৃত ফোনে ভুয়া ফোনকল বা মেসেজ প্রবেশ করলে চিহ্নিত নম্বরটি দ্রুত ব্লক করার সঙ্গে রিপোর্ট করতে হবে। নম্বরটি শুধু ব্লক করে দিলে নিজের কাছে হয়তো ওই নম্বর থেকে সরাসরি ফোন আসা বন্ধ হবে, কিন্তু চারপাশের বহু মানুষের প্রতারিত হওয়ার সুযোগ থেকে যায়।
আজকাল কমবেশি সবার ফোনেই ‘ট্রু কলার’ ইনস্টল থাকে। যাতে নম্বরটি কোথা থেকে আসছে, তা বুঝতে খুব বেশি অসুবিধা না হয়। যদি ‘ট্রু কলার’ না থাকে, তাহলে গুগল প্লে স্টোর থেকে তা ইনস্টল করে নেওয়াই শ্রেয়।
শনাক্ত ভুয়া ফোনকে ট্রু কলারের মাধ্যমে রিপোর্ট করার উদ্যোগ নিতে হবে। নম্বরটি তা হলে ‘স্ক্যাম কল’ হিসেবেই সবার কাছে চিহ্নিত হবে। অন্যদিকে, হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেজ থেকেও ফোন নম্বরটি ভুয়া কিনা, তা যথাযথভাবে রিপোর্ট করা যায়।
প্রতারকের কাছ থেকে আসা কোনো ফোনকল যদি তুলে ফেলেন বা কোনো মেসেজের লিঙ্কে ক্লিক করে ফেলেন, তাহলে সবার আগে নিজের ব্যাংক ও অন্য সব অ্যাকাউন্টে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা, তা দ্রুত যাচাই করে নিন। প্রতারক চক্র ফোনকল বা মেসেজের মাধ্যমে অনেক সময় ডিভাইসে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে দেয়। তাই নিজের ফোনে কেউ অযাচিত নজরদারি করছে কিনা বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা ব্যবহৃত মোবাইল ফিন্যান্স সার্ভিসে (এমএফএস) কোনো সন্দেহজনক কিছু ঘটছে কিনা, তা আগে বিশেষভাবে যাচাই করে নিতে হবে। সন্দেহ বেশি হলে বা প্রয়োজনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন।
যদি অজানা নম্বর থেকে ক্রমাগত ফোনকল বা মেসেজ দৃশ্যমান হয় বা বিশেষ উদ্দেশ্যের কথা বলে কোনো ওটিপি প্রেরণ করা হয়, তা হলে আগে ফোনের লকস্ক্রিন ও বাকি সবকটি অ্যাপ পাসওয়ার্ড দ্রুত বদলে নিতে হবে। জিমেইল বা হোয়াটসঅ্যাপে এমন ওটিপি বা সন্দেহজনক লিঙ্ক আসতে পারে। তাই নিরাপত্তার প্রয়োজনে নিরাপদ ও পরীক্ষিত কোনো অ্যান্টিভাইরাস ডাউনলোড করে ফোন স্ক্যান করে নিতে হবে। আর্থিক লেনদেনে ব্যবহৃত এমন সবকটি অ্যাপে নতুন পাসওয়ার্ড দিতে হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫