পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
Published: 13th, January 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে শহিদুল ইসলাম (৪২) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার ভোরে উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়ন সীমান্তের ওপারে ভারতের কোচবিহারের ময়নাতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শহিদুল ইসলাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের কাশিরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম জবেদ আলী।
এ বিষয়ে ৬১ (তিস্তা-২) বিজিবি ব্যাটালিয়নের শমসেরনগর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আহত ব্যক্তি গরু পারাপারকারী (ডাঙ্গোয়াল)। এ ঘটনায় রোববার ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে মীররাপা বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
আরও পড়ুনআবারও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা বিএসএফের, পতাকা বৈঠকে বিজিবির প্রতিবাদ০৯ জানুয়ারি ২০২৫বিজিবি ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৫৯ প্রধান পিলার নম্বরের ৪ নম্বর উপপিলার এলাকা দিয়ে শহিদুল ইসলামসহ চার থেকে পাঁচজনের একটি চোরাকারবারির দল ভারতের কোচবিহারের মাথাভাঙ্গা থানার ময়নাতলী গ্রামে গরু আনতে যায়। তাঁদের সহায়তা করে ভারতের গরু চোরাকারবারির দল। গরু নিয়ে ফেরার পথে ভারতের রানীনগর ১৬৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বুড়াবুড়ি ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এতে শহিদুল ইসলামের পায়ে গুলি লাগে। সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাতেই রংপুরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সেখানে তিনি গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জগতবেড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘লোকজনের মুখে ঘটনাটি শুনেছি। শহিদুল ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়েছেন। তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি গোপনে রংপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।