সময় যে কত দ্রুত রং বদলায়! গত মাসেই টটেনহামের বিপক্ষে ভুল করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন আলতাই বায়িনদির। রোববার রাতে পেনাল্টি ঠেকিয়ে সেই বায়িনদির ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নায়ক। তুর্কি এ গোলরক্ষকের নৈপুণ্যে ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে আর্সেনালকে হারিয়ে দিয়েছে ম্যানইউ। ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে ১০ জনের ম্যানইউকে হারাতে না পেরে ভীষণ হতাশ গানার বস মিকেল আর্তেতা।

২০২৩ সালে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আসেন তুরস্কের গোলরক্ষক আলতাই বায়িনদির। এ মৌসুমে লিগ কাপের তিনটি ম্যাচ ছাড়া ম্যানইউর জার্সি তাঁর গায়ে ওঠেনি। সেই তিন ম্যাচে আবার তাঁর ভুলে টটেনহামের বিপক্ষে হারতে হয়েছিল। গত মাসে তাঁর ভুলে সরাসরি কর্নার থেকে গোল করে টটেনহামকে জিতিয়ে দিয়েছিলেন সন হিউং-মিন। তখন ২৬ বছর বয়সী এ তুর্কি গোলরক্ষকের সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল। ভাগ্যের কী খেলা! 

রোববার রাতে সেই বায়িনদিরকে ‘আমাদের নায়ক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ম্যানইউ বস রোবেন আমোরিম। এমিরেটস স্টেডিয়ামে ৫২ মিনিটে ম্যানইউকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। ৬১ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রেড ডেভিল ডিফেন্ডার দিয়াগো দালোত। পরের মিনিটেই সমতা ফেরান গ্যাব্রিয়েল। ৬ মিনিট পর এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকরা। কাই হাভার্টজকে ফাউল করলে পেনাল্টি পেয়েছিল গানাররা।

কিন্তু মার্টিন ওডেগার্ডের শট ঠেকিয়ে দেন বায়িনদির। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত সময়ে আর কোনো গোল না হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে হাভার্টজের শট ঠেকিয়ে নাটকীয়ভাবে ম্যানইউকে জিতিয়ে দেন বায়িনদির।

টাইব্রেকার মিস করায় আর্সেনাল সমর্থকদের কাছে খলনায়ক বনে গেছেন হাভার্টজ। জার্মান এ স্ট্রাইকারের স্ত্রী ও তাঁর গর্ভের সন্তানকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় বেশ আতঙ্কে আছেন হাভার্টজের পরিবার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই হুমকির কথা জানিয়েছেন ফুটবলারের স্ত্রী সোফিয়া, ‘আমি ও আমার গর্ভের সন্তানকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি এসে দুইজনকে খুনের কথা লিখেছে একজন।

আরেকজন প্রার্থনা করেছে, আমার গর্ভের সন্তান যেন নষ্ট হয়ে যায়। আমরা আতঙ্কিত। বুঝতে পারছি না কী করব।’ যদিও এই ঘটনায় হাভার্টজের পাশে দাঁড়িয়েছেন গানার বস আর্তেতা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ