দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে বের হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরনজিত মহালদার। কিন্তু মেয়েকে নিয়ে আর বাসায় ফেরা হয়নি। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার রাত আড়াইটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে পুরনজিতের মৃত্যু হয় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার। এর আগে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরনজিত মহালদার গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে গতকাল রাত ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

বাংলা বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল দুপুরে মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে যান পুরনজিত। পথে রাজশাহীর বারো রাস্তার মোড় এলাকায় বালুর সঙ্গে স্লিপ খেয়ে মোটরসাইকেল থেকে তিনি সড়কে পড়ে যান। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

এদিকে আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে পুরনজিত মহালদারের মরদেহ আনা হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ