সাবেক এমপি বাবেলের অ্যাকাউন্টে ৬০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন
Published: 16th, January 2025 GMT
আলোচিত ও বিতর্কিত সাবেক এমপি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে বাবেলের বিরুদ্ধে এবং সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে বাবেলের স্ত্রী শারমিন গোলন্দাজ তুষ্টির বিরুদ্ধে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলা দুটি করেন।
ফাহমী গোলন্দাজ ময়মনসিংহ-১০ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হয়ে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জাড়িয়ে পড়েন। সরকারিভাবে বিশেষ বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। নিজে প্রকাশ্যে গুলি করে বিতর্কিত হয়েছেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। বর্তমানে তিনি পলাতক।
এজাহারে ফাহমী গোলন্দাজের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ১১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে, যা তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। তাঁর নামে ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা জমা এবং ২৩ কোটি ৬১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। মোট ৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকার সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক লেনদেনের রেকর্ডপত্র রয়েছে দুদকের হাতে। একই সময়ে ৮৬ হাজার ৭৯ মার্কিন ডলার জমা ও ৮৫ হাজার ৫৬৭ মার্কিন ডলার উত্তোলন করা হয়।
শারমিন গোলন্দাজের নামে ১ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। তাঁর নামে তিনটি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা এবং ৯০ লাখ ৬৯ টাকা উত্তোলন করা হয়, যা সন্দেহজনক লেনদেন।
সাবেক মন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের নামে মামলা
বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেন বাদী হয়ে সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধে এবং সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে জিল্লুল হাকিমের স্ত্রী সাঈদা হাকিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। জিল্লুল হাকিমের ছেলে আশিক মাহমুদ মিতুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো.
জিল্লুল হাকিমের নামে মামলার এজাহারে বলা হয়, তাঁর ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। তাঁর ১৯টি ব্যাংক হিসাবে ২৭৮ কোটি ৮১ লাখ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন হয়। সাঈদা হাকিম ওরফে সাইদা সুলতানা চৌধুরীর নামে ৪ কোটি ২৭ লাখ ৭২ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। ছয়টি ব্যাংক হিসাবে মোট ২০ কোটি ২৪ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়।
আশিক মাহমুদ মিতুলের নামে ২ কোটি ৬২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। তাঁর ব্যাংক হিসাবে মোট ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়, যা অস্বাভাবিক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মোজাম্মেলের অবৈধ সম্পদ ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, দুদকের মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে সংস্থাটির নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আ ক ম মোজাম্মেল হক ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তিনটি ব্যাংকে ৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ১১৪ টাক সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, আ ক ম মোজাম্মেল হকের ঋণ বাদে স্থাবর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১২ কোটি ৫৪ লাখ ২১ হাজার ২৮০ টাকা। পারিবারিক ব্যয় ১ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ২৭৭ টাকা। ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ১৩ কোটি ১৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭ টাকা। তার মধ্যে গ্রহণযোগ্য আয় হলো ২ কোটি ৮২ হাজার ৯০ লাখ ৬৩০ টাকা আর জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ হলো ১০ কোটি ৩৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৭ টাকা। এই টাকা তিনি ভোগদখলে আছেন। একই সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠানসমূহের নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়েছেন ৪ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৭ টাকা। উত্তোলন করেছেন ৪ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৭ টাকা। সন্দেহজনক মোট লেনদেন করেছেন ৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ১১৪ টাকা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ