সমন্বয়ক রাফিকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি গোলাম রাব্বানীর
Published: 18th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফিকে তিনদিনে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাফির হোয়াটসঅ্যাপে এ হুমকি দেন তিনি। বিষয়টি নিজ ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টের মাধ্যমে জানান রাফি। এ সময়, তাকে হত্যা করা হলে বর্তমান সরকারের সুশীলতাকে দায়ী করে অভিযোগ করেন তিনি।
ওই পোস্টে রাফি লেখেন, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী গোলাম রাব্বানী আজকে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। প্রথম ১২ জুলাই ২০২৪ ইং আমাকে কল দেয় এবং জিজ্ঞেস করে, আমার কি লাগবে। এছাড়াও বিভিন্নভাবে কনভিন্স করার চেষ্টা করে। সবশেষে যখন কনভিন্স করতে পারেনি, তখন আমাকে নানানভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে কল কেটে দেয়।”
তিনি আরো লেখেন, “ঠিক একই নাম্বার থেকে আজ (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় কল দেয়। প্রথম কলটা রিসিভ করিনি। দ্বিতীয় কলটা রিসিভ করার পর জিজ্ঞেস করলো- চিনতে পেরেছি কি না! আমি চিনেও বললাম, না চিনতে পারিনি। তারপর কল কেটে দেয় এবং সাথে সাথেই ম্যাসেজ করলো, ‘Tumi ses hoye jabe only 3 day bro’ ।”
রাফি বলেন, “আমি জানি না, আমি আর কতদিন বাঁচতে পারবো! প্রতিনিয়ত এমন অহরহ হুমকি আসছে। কিন্তু আমাকে যদি হত্যা করা হয়, তাহলে এই সরকারের সুশীলতা দায়ী থাকবে।”
রাফি আরও বলেন, “আমি গত ১১ই জুলাই মরে গেছি; আমারে মৃত্যুভয় দেখিয়ে লাভ নাই। আর জুলাইয়ে আমাকে কিনতে পারো নাই, দাবায় রাখতে পারো নাই: এখনও পারবা না। ৩ আগস্ট আম্মা আমারে বলছিলো, ‘যা করবা বীরের মতো মাথা উঁচায়া করবা।’ এটাই আমার বাকি ছিলো, এটাও পেয়ে গেছি। আমার আর কোনো প্রাপ্তি নাই। শুধু একটাই চাওয়া বাংলাদেশ ভালো থাকুক।”
হুমকি বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।