সকালে নাশতা খেয়ে পরিবারের সবাই অসুস্থ, রাতে ডাকাতি
Published: 22nd, January 2025 GMT
সকালের নাশতা খেয়ে একই পরিবারের পাঁচজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে তারা রাতে ঘুমিয়ে পড়লে ঘটে ডাকাতির ঘটনা। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিণ শিমলাপাড়া গ্রামের জামাল মাসুদের বাড়িতে সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
বাড়ির কেউ টের পায়নি। গোপনে কেউ একজন এসে সকালের নাশতায় চেতনানাশক মিশিয়ে চলে যায়। পরিবারের পাঁচ সদস্য একসঙ্গে বসে নাশতা খেয়ে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাঁচজনই বিভিন্ন হাসপাতালে দিনভর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। সোমবার রাতের খাবার ও ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন সবাই। তারা যখন গভীর ঘুমে তখন ঘড়ির কাঁটা রাত ২টা পেরিয়ে গেছে। তখনই ওই বাড়িতে ঘটে দুর্ধর্ষ ডাকাতি। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে শ্রীপুর থানার চকপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
গৃহকর্তা জামাল মাসুদ জানান, তিনি, তাঁর স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও ৮০ বছর বয়সী বাবা একসঙ্গে বসে সোমবার সকালে নাশতা করেন। এর কিছুক্ষণ পরই সবাই দুর্বল হতে থাকেন। একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে প্রতিবেশীরা তাদের মাওনা চৌরাস্তার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। সুস্থ হলেও শরীরের দুর্বলতা কাটছিল না। পরে রাতে আগেভাগে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে মুখোশধারী একদল ডাকাত বাড়িতে হানা দেয়। দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকার ও টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা পালিয়ে গেলে তাদের চিৎকারে সবাই এগিয়ে আসেন।
শ্রীপুর থানার মাওনার চকপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হক বলেন, পরিকল্পিতভাবে ওই বাড়িতে দুর্বৃত্তরা হানা দিয়েছে। তারা সোমবার সকালে নাশতার সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে সবাইকে অসুস্থ করে। এরপর রাতে ওই বাড়িতে এসে লুটপাট করে। তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
আগামী ২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উঠছে। সভায় অনুমোদন হলে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ শুক্রবার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের সভার এ তারিখ নির্ধারণের তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ পর্ষদের বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে বিশেষত টাকা–ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৭৬ কোটি ডলার বাড়তি ঋণ চেয়েছে। বাড়তি ঋণ যোগ হলে মোট দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলার। বিবৃতিতে বিনিময় হার, রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাতসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।