ক্যান্সার আক্রান্ত কৃতির জন্য সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট
Published: 22nd, January 2025 GMT
রঙিন ঝলমলে আলোয় মঞ্চে একের পর এক গান গাইছেন শিল্পীরা। সামনে গানের তালে ছন্দ তুলছেন শ্রোতা-দর্শনার্থীরা। এসব আনন্দের আবহের মধ্যেই শিল্পী ও আয়োজকরা আহ্বান জানাচ্ছিলেন, ‘ক্যান্সার আক্রান্ত কৃতির জন্য সহায়তার’। এতে সাড়া দিয়েছেন অনেকেই। এভাবে ওই কনসার্ট থেকে উত্তোলন হয় ১৩ লাখ টাকা।
সাভারে মেধাবী শিক্ষার্থী ক্যান্সার আক্রান্ত কৃতি ফিরোজীর জন্য স্থানীয় সাবেক কমিশনার ও সাভার পৌর মেয়র প্রার্থী মো.
আগামী ২৫ জানুয়ারি আরও একটি চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজন করা হবে বলে জানান কনসার্টের উদ্যোক্তা ও শিল্পীরা।
মেডিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ব্রেইন টিউমার শনাক্ত হয় সাভারের অধর চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক খোরশেদউজ্জামান ফিরোজীর ছেলে নাশিদুজ্জামান ফিরোজীর (কৃতি ফিরোজী)। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও উত্তরা হাই কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাকে ১৪ ডিসেম্বর নেওয়া হয় ভারতের দিল্লির হারিয়ানার গুরগাঁওয়ের মেডেন্টা হাসপাতালে। সেখানে ডা. ভি পি সিং এর তত্বাবধানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে রাখা হয় তাকে।
গত ১৬ ডিসেম্বর কৃতির প্রথম অস্ত্রোপচারের পর অসংখ্য টিউমারের মধ্যে সবচেয়ে বড় টিউমারটি অপসারণ করা হয়। সেটির বায়োপসি টেস্টের মাধ্যমে কৃতির ক্যান্সার নির্ণয় হয়।
পরিবার জানায়, কৃতির চিকিৎসায় এরইমধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। চিকিৎসকের প্রত্যাশা তার সুস্থ হতে একটি অপারেশন ও থেরাপির জন্য আরও ৫০-৬০ লাখ টাকা প্রয়োজন। তবে এই অর্থের যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে সাবেক শিক্ষকের পরিবারটি।
সম্প্রতি এই পরিবারের পাশে দাঁড়ান সাভার পৌর মেয়র প্রার্থী মো. খোরশেদ আলম। তিনি সঙ্গে পান সাভারের কয়েকজন শিল্পী ও মানবিক কাজে এগিয়ে আসা একদল মানুষকে। তাদের উদ্যোগে গত ৭ জানুয়ারি তারাপুর এলাকায় একটি চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজন করা হয়। ওই কনসার্টে দর্শক-শ্রোতারা প্রায় দেড় লাখ টাকা সহায়তা দেন।
এরপর গত ১৮ জানুয়ারি সাভারের ছায়াবীথি এলাকায় আরেকটি কনসার্ট আয়োজন করা হয়। সেই কনসার্টে যোগ দেন সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহপরিবার বিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুসহ সাভারের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। ওই কনসার্ট থেকে ১৩ লাখ টাকা সহায়তা উঠে আসে। এই পুরো অর্থ কৃতি ফিরোজীর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
কৃতি ফিরোজীর জন্য আয়োজিত কনসার্টে বিনামূল্যে গান করেন- শিল্পী ইমন ইসলাম, নিলয় আহমেদ, সোহেল আনাম, কেনেডি জন, শেকড় লিটন, বোরহান উদ্দিন ও তিমির রয়।
শিল্পীরা বলেন, “কৃতির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তার পরিবার আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে। আমরা তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। সেজন্য দুটি চ্যারিটি কনসার্ট করেছি। আরেকটি কনসার্ট করা হবে। এই কনসার্টে সবাইকে যোগ দেওয়ার ও সহযোগিতার আহ্বান জানাই।”
সাভার আশুলিয়াসহ সব মানবিক মানুষকে কৃতির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সাভার পৌরসভার মেয়র প্রার্থী মো. খোরশেদ আলম বলেন, “ক্যান্সার আক্রান্ত কৃতি ফিরোজীর চিকিৎসা সহযোগিতায় আমরা চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজন করেছিলাম। আগামী ২৫ জানুয়ারি আশুলিয়ার জিরাবোতে আরেকটি কনসার্ট করা হবে। সমাজে বসবাস করা সামাজিক মানুষ হিসেবে সবারই সামাজিক কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই চিন্তা থেকেই এ উদ্যোগ নেওয়া। কৃতি ফিরোজী সুস্থ হয়ে দেশে না ফেরা পর্যন্ত আমরা তার পাশে থাকব।”
কৃতি ফিরোজীর বাবা খোরশেদউজ্জামান ফিরোজী বলেন, “ব্রেইন ক্যান্সারে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবচেতন অবস্থায় বেঁচে আছে আমার ছেলে। আমরা তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে হিমসিম খাচ্ছি। এজন্য সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছি। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে মো. খোরশেদ আলম ভাই এগিয়ে এসেছেন। তারা সহযোগিতা করেছেন। তারা ভবিষ্যতেও আমার পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”
কৃতি ফিরোজীর জন্য সহায়তা পাঠাতে- বিকাশ/নগদ নম্বর +88 01712 679507 ; DBBL Acc no (Savar Branch)- 107103405442, Routing no-090264122. (নাছিমা খানম Nasima Khanam)। যোগাযোগের প্রয়োজনে- মিতু ফিরোজী- 01710-453377.
ঢাকা/সাব্বির/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ই কনস র ট র পর ব র পর ব র র র জন য স
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
পটুয়াখালীতে কুলসুম বেগম ও মোসা. সাহিদা বেগম নামের দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আল আমিন (২৭) সম্পর্কে নিহত সাহিদা বেগমের সৎছেলে এবং বৃদ্ধা কুলসুম বেগমের নাতি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত দুই নারীর স্বজন মো. আশ্রাফ খাঁ জানান, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এরপর তাঁর পরিবার তাঁকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে আল আমিনের বাবা রাজ্জাক খাঁ পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে আল আমিন দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর সৎমা সাহিদা বেগম ও বৃদ্ধ দাদি কুলসুম বেগমকে হত্যা করেন।
বাহাদুর আলম খাঁ (৫০) নামের এক আত্মীয় বলেন, নিহত সাহিদা সম্পর্কে তাঁর চাচিশাশুড়ি এবং কুলসুম বেগম দাদিশাশুড়ি। দুপুরে বাড়ির সবাই জুমার নামাজ পড়তে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ছেলে আল আমিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে সৎমা এবং পরে দাদিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তিনি বলেন, আল আমিন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দেখালেও সুস্থ হননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীকে হত্যার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তি ওই পরিবারের সদস্য। ঘটনার পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত তরুণ এখন পলাতক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।