বাংলাদেশে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কোনো না কোনো ধরনের প্রতিবন্ধিতায় ভুগছেন। প্রতিবন্ধিতাকে আবেগ বা সীমাবদ্ধতার দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং সাফল্য ও অবদানের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক পরামর্শ সভায় ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও অফিসপ্রধান সুজান ভাইজ এ তথ্য জানান। জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর সহায়তায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগবিষয়ক উন্নয়ন সংগঠন ‘সমষ্টি’ এ সভার আয়োজন করে। এতে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী সমতা বিষয়ে ব্যবহারিক নির্দেশিকার চূড়ান্ত খসড়ার ওপর আলোচনা হয়।

সভায় সুজান ভাইজ বলেন, গত বছর জুলাই বিপ্লবে বেশ বড়সংখ্যক তরুণ ও ছাত্র বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধিতাকে তাদের জীবনে বরণ করে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তারা আমাদের জনসংখ্যার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তির দরকার। গণমাধ্যমই পারে এ জনগোষ্ঠীর বিষয়ে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের প্রবেশগম্যতা আরও সহজ করতে। সভায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের আরও দৃশ্যমান ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্ব দেন আলোচকরা।

সমষ্টির নির্বাহী পরিচালক মীর মাসরুজ্জামানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মফিজুর রহমান, উইম্যান ‍উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের উজ্জ্বল মাহমুদ, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেক্টর লিড নূরে জান্নাত প্রমা, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী, মানিকগঞ্জ ডিজঅ্যাবল্ড পিপলস অর্গানাইজেশনের চেয়ারপারসন কাবেরী সুলতানা, আইএলওর কর্মসূচি কর্মকর্তা ও জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রতিবন্ধিতাবিষয়ক টাস্কফোর্সের প্রধান ফারজানা রেজা প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ