পারিশ্রমিক পরিশোধ নিয়ে আলোচনায় থাকলেও শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে আছে দুর্বার রাজশাহী। জয়ের সহজ দুটি সুযোগ না হারালে বেশ এগিয়েই থাকত তারা।

চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে টেবিলের টপার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিং করেছে তাসকিন আহমেদের দল। ইয়াসির আলী রাব্বির ব্যাটে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান তুলেছে তারা। 

চট্টগ্রামের উইকেটে শুরুতে ব্যাটিং সহজ হলেও শেষে বেশ কঠিন হচ্ছে। রাজশাহীর সঙ্গেও ঘটেছে একই ঘটনা। ওপেনার মোহাম্মদ হারিস ১৯ রান করে ফিরে গেলেও অন্য ওপেনার সাব্বির হোসেন ১৯ বলে ৩৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। চারটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান তিনি। 

তিনে নেমে এনামুল হক বিজয় খেলেন ৩১ বলে ৩৪ রানের ইনিংস। ৭৬ রানে ২ উইকেট থেকে ৩ উইকেট হয়ে কিছুটা চাপে পড়ে রাজশাহী। পাঁচে নেমে ইয়াসির আলী রাব্বি ৩২ বলে ৬০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। তার ব্যাট থেকে ছয়টি ছক্কা ও দুটি চারের শট আসে। 

রাজশাহী দুইশ’ রানের কাছাকাছি যাবে এমনই মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষ দিকে আকবর আলী, সানজামুল ইসলামরা রান করতে না পারায় রানটা আরো বড় হয়নি তাদের। পুরো আসরে ব্যর্থ আকবর এদিন ৬ বলে ২ রান করেন। মেহরাব ৬ বলে ৪ রান, সানজামুল ৪ বলে ২ রান করেন। তাসকিন ৩ বলে ৪ রান করেন। 

রংপুরের হয়ে দুই পাকিস্তানি আকিফ জাভেদ ও খুশদীল শাহ দারুণ বোলিং করেছেন। বাঁ-হাতি পেসার আকিফ ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। খুশদিল ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। নাহিদ রানা ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।      

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে দখলদারি ও নির্বাচন ঘিরে বিএনপির সংঘাত থামছে না

দখলদারি ও নির্বাচনী মনোনয়ন ঘিরে চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি, পাল্টাপাল্টি খুন থামছেই না। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিকেলে রাউজানের সত্তারহাট এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপির শক্ত দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে আছে। কমিটি ও পদ স্থগিত করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

বর্তমানে রাউজান বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুই নেতার অনুসারী। এই দুই নেতার একজন হলেন দলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী; অন্যজন উত্তর জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার। সংঘর্ষের সর্বশেষ ঘটনাটিও ঘটেছে এই দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে। গোলাম আকবর খন্দকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিরোধীপক্ষের নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার এ নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। আবার একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দায়ী করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর রাউজানের পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা, স্কুল ও কলেজশিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা হেনস্তা হওয়ার ভয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে এই প্রতিবেদককে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আবার সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ায় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরাই ‘শক্তি’ প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। পাশাপাশি রাউজানের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতেই একের পর এক সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। যাঁর হাতে ক্ষমতা, তাঁরাই নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বালুমহাল ও ইটভাটা, ইট-বালু সরবরাহের ব্যবসা, বিল ভরাটের কাজে মাটি-বালু সরবরাহের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করেন। পাহাড়ি সীমান্ত এলাকা হওয়ায় রাউজানের ওপর দিয়ে কাঠ ও মদ চোরাচালান হয়। অনেক সময় অস্ত্র পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয় রাউজান। এসবের নিয়ন্ত্রণ নিতেই স্থানীয় পর্যায়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় উভয় পক্ষের দখলদারি রয়েছে।

দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে। গোলাম আকবর খন্দকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিরোধীপক্ষের নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার এ নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। আবার একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দায়ী করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর সেদিন রাতেই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া স্থগিত করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও। রাউজানের ঘটনা তদন্ত করতে গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর। কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালকে। সাত দিনের মধ্যে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান আজীজুল বারী হেলাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাউজানে দুই প্রার্থী আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। সেখানে ইতিমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আগামী রোববার সরেজমিনে গিয়ে নেতা-কর্মী, ভুক্তভোগীসহ সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’

আরও পড়ুনরাউজানে খুন, পাল্টা খুন চার দশক ধরে ০৪ মে ২০২৫গত মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় পুড়িয়ে দেওয়া মোটরসাইকেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাউজানে দখলদারি ও নির্বাচন ঘিরে বিএনপির সংঘাত থামছে না
  • রাউজানে উত্তেজনা থামেনি, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বিএনপির দুই পক্ষের