বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশকে সুন্দর করার একটা বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু চারদিকে দেখা যাচ্ছে অনৈক্যের সুর।

আজ সোমবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইডিইবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন। চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’ নামের ম্যাগাজিন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।

রাজনীতিবিদের অনৈক্য নিয়ে হতাশার কথা জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, অনেকেই হতাশ। এত বড় একটা অভ্যুত্থানের পর এত বড় একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে দেশকে সুন্দর করার। কিন্তু চারদিকে দেখা যায়, রাজনীতিবিদরা ঐক্য হারিয়ে ফেলেছেন। অনেকে চলে যাচ্ছেন। চারদিকে একটা অনৈক্যের সুর দেখা যায়। এতে তাঁরা অনেকেই হতাশ হচ্ছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতিবিদদের কথা হয়তো শুনতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু রাজনীতিবিদেরা একটা দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করেন, পথ তৈরি করেন অথবা পথ নষ্ট করেন। কিছু রাজনীতিক একটা জাতিকে অত্যন্ত উচ্চশিখরে নিয়ে যান। আবার কেউ কেউ জাতিকে একেবারে নিচে নিয়ে যান। রাজনীতির মধ্যে যদি সৌন্দর্য না আনা যায়, সততা না আনা যায়, তাহলে রাজনীতি কখনোই সুন্দর হবে না। আর রাজনীতি যদি হয় জনগণের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়া, বিদেশে সম্পদ তৈরি করা, তাহলে মানুষ ঘৃণা করবে।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য যে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিম্নমানের। এ জন্য দায়ী রাজনীতিবিদেরা। দায়ী আমলাতন্ত্র।

কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব কম দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএ-এমএ পাস করে অনেকে বেকার বসে থাকেন। কিন্তু কারিগরি পড়ে কেউ বেকার থাকেন না। তবে কারিগরি শিক্ষার চেয়ে সেই বিএ-এমএতেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাঁদের সামনে এখন বিরাট সুযোগ ও সম্ভাবনা। তাঁদের দৃঢ়তা ও লক্ষ্যে স্থির থাকতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে। শিক্ষার্থীদের এখন ওড়ার সময়। ভবিষ্যৎ তাঁদের ডাকছে। পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য নিজেদের তৈরি করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, মানুষকে সম্মান করতে হবে। এ দেশের সমস্যা অনেক। শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নিতে হবে। দেশের কাছ থেকে পাওয়ার চেয়ে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো.

সবুর খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বন্ধুত্ব, প্রতিবাদের মানসিকতা ধরে রাখতে হবে। নিজেদের একতা ধরে রাখতে হবে। শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। এ দেশ সমস্যায় জর্জরিত। এটাই বড় সুযোগ দেশের জন্য কিছু করার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, আইডিইবির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কবীর হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার সম্পাদক হারুন অর রশীদ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ব দ অন ষ ঠ ন স ন দর অন ক য ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে পর্যটককে ছুরিকাঘাত, পাঁচ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে আসা এক পর্যটককে জিম্মি করে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে শহরের কলাতলী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহমেদ পেয়ার। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এলাকায় কয়েকজন ছিনতাইকারী অটোরিকশাযোগে সৈকত থেকে হোটেলের দিকে যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের পর্যটক সাইফুল্লাহকে জিম্মি করে মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালান। বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা সাইফুল্লাহকে ছুরিকাঘাত করে মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত পর্যটককে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপর পুলিশ ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযানে নামে। রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত পাঁচজন তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এ সময় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও ১০টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে, মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য ছিনতাইকারীদেরও শনাক্তের কাজ চলছে।

গ্রেপ্তার পাঁচ ছিনতাইকারী হলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ডিককুল গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (২৮), কক্সবাজার পৌরসভার পিটি স্কুল এলাকার মো. সেলিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২১), নতুন বাহারছড়া এলাকার ফজল করিমের ছেলে মো. সোহেল (২২), কলাতলীর কালা পুতুর ছেলে মো. সিদ্দিক (৪০) ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মো. সারোয়ারের ছেলে ইমরান সারোয়ার (২৫)।

ছুরিকাঘাতে আহত পর্যটক সাইফুল্লাহর বাড়ি টাঙ্গাইলের বাসাইলের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নাহালি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম সিদ্দিক সিকদার। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ