আন্দোলনের মুখ থেকে রাকসুর জিএস আম্মার
Published: 20th, October 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার। আন্দোলনের সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হন। আন্দোলনজুড়ে ছিলেন মিছিলের অগ্রভাগে। জুলাই–পরবর্তী ক্যাম্পাসেও নিজের সেই পরিচিতি ধরে রেখেছিলেন। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীবান্ধব নানা দাবি আদায়ে ছিলেন সোচ্চার।
পোষ্য কোটা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশের বিরাগভাজন হয়েও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে অভাবনীয় জয় পেয়েছেন সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি গত বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের মোট প্রাপ্ত ভোটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জিএস এবং সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে হয়েছেন সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি।
সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি খুলনার কয়রা উপজেলায়। তিনি ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ছিলেন। পাশাপাশি সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি প্রার্থীও হয়েছিলেন। তিনি দুটি পদে বড় ব্যবধানে জিতেছেন। আর ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে একজন এবং স্বতন্ত্র থেকে সম্পাদক পদে একজন বাদে রাকসুর ২৩টি পদের মধ্যে ২০ পদে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল জিতেছে।
আম্মার পরিচিতি পান ফিলিস্তিন ইস্যুতেসালাহউদ্দিন আম্মার ক্যাম্পাসে এসে পরিচিতি পান ফিলিস্তিন ইস্যুতে একটি আন্দোলনের মাধ্যমে। ফিলিস্তিনিদের মুক্তির দাবিতে প্যারিস রোডে তিনি আর্ট পারফরম্যান্স করেছিলেন। পরে জুলাইয়ে আন্দোলন আরও বেশি পরিচিতি এনে দেয় তাঁকে। কোটা আন্দোলনের শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমন্বয়ক কমিটি আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন। তখন আন্দোলনে ভাটা পড়লে তিনি নিজেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘সমন্বয়ক’ হিসেবে ঘোষণা দেন। তাঁর ডাকে আবারও রাজপথে নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা।
একপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ সমন্বয়কের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির অন্যতম একজন ছিলেন তিনি। আন্দোলনজুড়ে কখনো হ্যান্ডমাইকে, কখনো কাফনের কাপড় পরে স্লোগান দিয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ক্যাম্পাসে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ, পোষ্য কোটা বাতিল, ৯ দফা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি যেতে পেরেছিলেন।
আরও পড়ুনরাকসুর ২৩ পদে কার সঙ্গে কার লড়াই হলো, জয়ের ব্যবধান কত১৭ অক্টোবর ২০২৫আম্মার ছিলেন পোষ্য কোটাবিরোধী আন্দোলনেজুলাই আন্দোলনের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি ছিল পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন। সালাহউদ্দিন আম্মার পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ছিলেন। এ নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনের একপর্যায়ে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি প্রশাসন ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করা হয়। সেদিন রাতে উপাচার্য পোষ্য কোটা একেবারে বাতিল করার ঘোষণা দেন। পরে রাকসু নির্বাচনের আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ১০ শর্তে প্রশাসন পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনলে শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনে নামেন। ২০ সেপ্টেম্বর পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেদিন একজন সহ-উপাচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তার সঙ্গে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। সহ–উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেও রাখা হয়। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে রাতভর শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলনের ফলে সালাহউদ্দিন আম্মারকে প্রশাসন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়াতে হয়। শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী হিসেবে আম্মারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন।
আরও পড়ুনযে সম্মান নিয়ে আজ ঢুকছি, সেই সম্মান নিয়ে বের হতে চাই: রাকসুর জিএস আম্মার১৭ অক্টোবর ২০২৫তদন্ত কমিটির বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটি তাদের মতো তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করছে। সংকটটা তো প্রশাসন তৈরি করেছে। এই সংকট যদি তারা সৃষ্টি না করত, তাহলে আজকে আমাদের এ ধরনের একটি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতো না।’
রাকসু নির্বাচনের সময় সালাহউদ্দিন আম্মার ও তাঁর প্যানেল ঘিরে আলোচনা ওঠে তাঁরা শিবিরের ‘বি টিম’ হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা ভালো বলতে পারবেন ন্যারেটিভ আছে কি না। আমরা তো সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়াই করছি। তো এটা বলার আর কোনো সুযোগ নেই। তবে যারা বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাইবে, তারা তো চাইবেই।’
৯ দফা দাবি নিয়ে মাঠে ছিলেন আম্মারপূর্ণাঙ্গ আবাসিকতার রোডম্যাপ ঘোষণা; পরীক্ষায় রোলবিহীন খাতা মূল্যায়ন ও খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ; ক্যাম্পাসে সপ্তাহে ৭ দিন, ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ ৯ দফা দাবি নিয়ে চলতি বছর জুন থেকে আন্দোলন করেন আম্মার। এই ৯ দফা তিনি তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যেও রেখেছিলেন।
রাকসু নির্বাচনে জিএস পদে সালাহউদ্দিন আম্মার ১১ হাজার ৫৩৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম শিবিরের প্যানেলের জিএস প্রার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক উপ চ র য পর চ ত র জ এস র একট
এছাড়াও পড়ুন:
তওবা শুধু মুখের নয়, হৃদয়েরও
অনেকে খুব সহজে বলে ফেলেন, আল্লাহ তো অনেক দয়ালু। আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন, এত চিন্তা কিসের? তারা হাসিমুখে নিশ্চিন্তে গুনাহ করে যান। আবার কিছু মানুষ এও বলে, মানুষ কত কী গুনাহ করে, আমার এসব তো ছোটখাটো গুনাহ। ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ বলে একসময় মাফ চেয়ে নেব, ব্যস। কেউ ভাবেন, সওয়াবের কাজ করব আবার গুনাহ্ করব একটু। বা গুনাহ করে সওয়াবের কাজ করে ফেলব। কাটাকাটি হয়ে যাবে।
কেউ কেউ উদাহরণ দেন, একজন পতিতা পানি পান করানোর মতো ক্ষুদ্র কাজ করেও জান্নাতে গেছে। অথবা একজন একশোটি খুন করেও ক্ষমা পেয়ে গেছে।
কথা হল, সবার ভাগ্যেই কি এটা ঘটবে? কার ভাগ্যে ক্ষমা জুটবে, কে সৌভাগ্যবান হবে এটা কে বলতে পারে? যারা ক্ষমা পেয়েছেন, হতে পারে তারা না জেনে পাপ করেছিলেন। জানার পরপর ক্ষমা চেয়েছেন এবং এমনভাবে তওবা করেছেন যে দ্বিতীয়বার আর সে পাপ করেননি।
আর যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে, আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল।সুরা ত্বহা, আয়াত: ৮২জেনেশুনে পাপ করা আর না জেনে পাপ করা কি সমান? তাওবা কবুলের অন্যতম শর্ত হল, এমনভাবে অনুশোচনা করা যে আর কখনো সে পাপ করবে না।
বান্দার মনের গোপন, প্রকাশ্য সব খবর আল্লাহ জানেন । বান্দা কি জেনে বুঝে ইচ্ছে করে গুনাহ করছে, নাকি না জেনে বা ভুলবশত গুনাহ করছে, তা তাঁর অজানা নেই। তাঁকে ফাঁকি দেওয়ার কোন উপায় নেই। তিনি লাতিফুল খবির বা অতি সূক্ষ্মদর্শী।
আরও পড়ুনঐক্যই মুসলিম উম্মাহর সৌন্দর্য০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত হয়েও আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) প্রতিদিন সত্তরবারের বেশি ইস্তিগফার করতেন। অথচ তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ গুনাহমুক্ত। তাহলে তাঁর উম্মত হয়ে আমরা কিভাবে এত নিশ্চিন্তে গুনাহ করতে পারি? কিভাবে ভাবি, ক্ষমা তো মিলবেই। এত নিশ্চিন্তে, নির্ভাবনায় কীভাবে আশা করতে পারি?
হ্যাঁ, আল্লাহ্ অতি দয়ালু, ক্ষমাশীল। আবার অবাধ্যদের শাস্তিদানের বেলায় কিন্তু তিনি অনেক কঠোরও। আল্লাহর ক্ষমার আশা করতে হবে, কিন্তু ভয়ও করতে হবে। বলা হয়েছে, বান্দার গুনাহ আকাশ পরিমাণ হলেও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন।
তবে তার জন্য কোনো গুনাহ করার পর হৃদয়ে অপরাধবোধ জাগ্রত হতে হবে। নিজেকে গুনাহের কারণে অপরাধী মনে করে সেই গুনাহ আর না করার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ফিরে যেতে হবে, তওবা করতে হবে।
তওবা করলেই সেটা কবুল হয়ে যায় না বা মুখে ক্ষমা প্রার্থনা দ্বারাই আল্লাহ ক্ষমা করে দেন না। তওবা কবুল হওয়া বা শুদ্ধ হওয়ার জন্য একাধিক শর্ত রয়েছে।আর হৃদয়কে সবধরনের গুনাহ, অন্যায় থেকে বিরত রাখার মাধ্যমেই একজন বান্দা সফলকাম হতে পারে। সুরা ত্বহায় আল্লাহ বলেছেন, “আর যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে, আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল।” (সুরা ত্বহা, আয়াত: ৮২)
তবে তওবা কিন্তু মোটেও সহজ নয় যে মুখে বললাম তওবা করেছি, ব্যস হয়ে গেল। কারণ তওবা করলেই সেটা কবুল হয়ে যায় না বা মুখে ক্ষমা প্রার্থনা দ্বারাই আল্লাহ ক্ষমা করে দেন না। তওবা কবুল হওয়া বা শুদ্ধ হওয়ার জন্য একাধিক শর্ত রয়েছে। শর্তগুলো পূরণ করা তওবা কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত। শর্তগুলো হচ্ছে:
কৃত গুনাহের জন্য আন্তরিকভাবে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া।
এ ধরনের গুনাহ্ দ্বিতীয়বার না করার উপর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া।
আল্লাহর নিকট বিশুদ্ধচিত্তে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে প্রত্যাবর্তন করা।
যদি অন্য কারো উপর জুলুম বা অন্যায় করা হয়ে থাকে তবে ঐ ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাওয়া।
আরও পড়ুনইস্তিগফার জীবিকা লাভের মাধ্যম৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫গুনাহ করতে করতে অনেকের এমন অবস্থা হয়, গুনাহকে ঘৃণা করা বা খারাপ মনে করার অনুভূতি হারিয়ে ফেলে। ফলে গুনাহের কাজে সে অভ্যস্ত হয়ে যায়; তার কাছে যেকোনো গুনাহ তুচ্ছ মনে হয়। অথচ একটি ছোট ছিদ্র যেমন বিশাল জাহাজকে ডুবিয়ে দিতে পারে, তেমনি একটি ছোট গুনাহও মানুষের ধ্বংসের কারণ হতে পারে।
এরপর সেই মানুষ আর কোনো কিছুতেই অস্বস্তি বোধ করে না। মানুষজন যদি তাকে গুনাহ করতে দেখে ফেলে বা সমালোচনা করে, তাতেও সে লজ্জাবোধ করে না। বরং গুনাহকে স্বাভাবিক মনে করে, আর অন্যায় ও অবাধ্যতাকে গুরুত্বহীন ভাবতে শুরু করে।
যখন একজন মানুষ গুনাহ করতে করতে গুনাহকে তার কাছে সহজ মনে হয়, গুনাহকে ছোট মনে করে, এবং তার মধ্যে আর কোনো লজ্জা বা অপরাধবোধ কাজ করে না; তখনই তা-ই তার ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবু মানুষ দুনিয়ার মোহে ব্যস্ত। গুনাহ করে, করতেই থাকে। বিশুদ্ধ তওবা করতে দেরি করে। কিন্তু দয়াময় আল্লাহ তবু বান্দার জন্য দরজা খোলা রাখেন যতক্ষণ প্রাণ গলায় পৌঁছেনিআব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, “মুমিন নিজ গুনাহকে এমনভাবে দেখে, যেন একটি পাহাড়ের পাদদেশে বসে আছে আশঙ্কা করছে যে সেটি তার ওপর পতিত হবে আর পাপী নিজ গুনাহসমূহকে মাছির মত মনে করে যা তার নাকের ওপর পড়েছে একটু পর উড়ে গিয়েছে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৪৯)
তবুও দয়াময় আল্লাহর করুণা অপরিসীম। তিনি বান্দাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন এবং চান, মানুষ গুনাহের পরও গুনাহ মুক্তভাবে বিচারদিবসে উপস্থিত হোক। তাই কেউ গুনাহ করলে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে গুনাহ হয়ে গেলেও তার প্রতিকার হিসেবে বিশুদ্ধ চিত্তে ক্ষমা চাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন।
রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পাপ থেকে তওবা করে, সে এমন অবস্থায় পৌঁছে যায় যেন সে কখনো পাপই করেনি।” তিনি আরো বলেছেন, “আদম সন্তানের প্রত্যেকেই ভুলকারী। আর তাদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাওবাকারী।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৪৯৯)
তবে যারা নিশ্চিন্তে ক্ষমা পাওয়ার আশা নিয়ে গুনাহ করে যেতে থাকে তারা কিভাবে নিশ্চিত থাকে যে তারা ক্ষমা পাবে, বা ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার মতো হায়াত পাবে? যেখানে মৃত্যুর ক্ষেত্রে এক সেকেন্ডেরও ভরসা নেই! কেউ কথা বলতে বলতে, কেউ খেলতে খেলতে, কেউ হাসতে হাসতে মারা যায়। আবার কেউ ঘুমের মাঝেই অদৃশ্য এক যাত্রায় পাড়ি জমায়, ফিরে আসে না। তারা কি জানত, এটাই তাদের শেষ নিঃশ্বাস ছিল? তারা কি ভাবতে পেরেছিল, তাওবা করার আর কোনো সুযোগ তারা পাবে না? মৃত্যু কাউকে সময় দেয় না।
তবু মানুষ দুনিয়ার মোহে ব্যস্ত। গুনাহ করে, করতেই থাকে। বিশুদ্ধ তওবা করতে দেরি করে। কিন্তু দয়াময় আল্লাহ তবু বান্দার জন্য দরজা খোলা রাখেন যতক্ষণ প্রাণ গলায় পৌঁছেনি, ততক্ষণ ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং, বলুন, হে আল্লাহ, আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন এবং আমাদের তওবা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি তাওবা গ্রহণকারী ও পরম দয়ালু।” (সুনানে ইবন মাজাহ, হাদিস: ৩৮১৪)