শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষকদের সমাবেশ
Published: 24th, January 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতনের দাবিতে রাজধানীর শহীদ মিনারে সমাবেশ করছেন শিক্ষকরা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় দেশের বিভিন্ন জেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা এসে জড়ো হন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আজ সকাল সাড়ে ১১টা থেকে পবিত্র কোনআন তোলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ।
সমাবেশে শিক্ষকদের ‘এক দফা, এক দাবি’, ‘শিক্ষকদের ১০ গ্রেড’, ‘জেগেছে রে জেগেছে’, ‘শিক্ষক সমাজ জেগেছে’, ‘তুমি কে আমি কে শিক্ষক শিক্ষক’, ‘ইউনূসের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’- এমন নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা সুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শারমিন রহমান সমকালকে বলেন, শিক্ষকের মান যদি উন্নয়ন না হয়, তাহলে কিভাবে শিক্ষার গুণগত মান ঠিক হবে। তিনি বলেন, শিক্ষকের বেতন কম, সম্মান কম, মাস শেষে পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। শুধু দশম গ্রেড নয়, আমরা শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতিও চাই।
কুমিল্লা থেকে আসা টি সাহেববাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরমান হাসিব বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে দশম গ্রেডের দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের একটাই দাবি, আমরা রাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে থাকতে চাই না। অন্তবর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন আমাদের দাবি দ্রুত সময়ে মেনে নেওয়া হয়। শিক্ষকদের তৃতীয় শ্রেণিতে রেখে সুন্দর দেশ গড়া সম্ভব না বলেও জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।