গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক আহত হন। এছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে দুই সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতারা।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ঘটনাটি ঘটে। 

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো.

সাজেদুর রহমানের বলেন, “ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতরে না গেলেও পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় পাবনায় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহত

গাজীপুরে কারখানায় হামলা-ভাঙচুর, ২ শ্রমিক আহত

বশেমুরবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জসিম উদদীন বলেন, ‍জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম সোহাগ পরীক্ষা শেষে হল থেকে বের হলে সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে। যখন তাকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হচ্ছিল, সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে সোহাগকে ছাড়িয়ে নেয়। এসময় হামলাকারীরা নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে স্লোগান দেয়।” 

তিনি আরো বলেন, “তাদের হামলায় আমি ও অপর সমন্বয়ক ওমর শরীফ আহত হই। এসময় বশেমুরবিপ্রবি আমার দেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাসেল হোসেন ও সাংবাদিক আতিক ফয়সাল ও আরো এক শিক্ষার্থী আহত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলার প্রতিবাদে পরে সমন্বয়করা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।”

এই সমন্বয়ক বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী সোহাগ ৫ আগস্টের পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে আধিপত্য দেখাতে থাকেন। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচারের দাবি জানাই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলছি।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্যের উপস্থিতিতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়।” 

হামলায় আহত অপর সমন্বয়ক ওমর শরীফ বলেন, “ছাত্রলীগ নেতা সোহাগকে আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার সময় আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।”

বশেমুরবিপ্রবির প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন, “আমি বন্ধের দিন ছুটিতে বাড়িতে আছি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফোনে ঘটনা শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি দেখব।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সমন বয়ক র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩