প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

শুক্রবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ কমিউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত সিআইপি সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় ‘ভেরিফিকেশন’ ঝামেলা কমানোসহ প্রবাসীদের সেবাগুলোতে হয়রানি কমানো আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা খুবই জটিল প্রক্রিয়া। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসীদের ভোটাধিকার সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করতে বিভিন্ন এক্সপার্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। ‍জুলাই বিপ্লবের পর এই সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের নিজেদের মধ্যে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু সকল আধিপত্যবাদ শক্তির বিরুদ্ধে এবং দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। তাই অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনায় সকলের সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রত্যাশা করছি।

প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিনিয়োগের ইকো সিস্টেম সহজ করার জন্য কাজ করছে। আপনারা (প্রবাসীরা) দেশে বিনিয়োগ করুন। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করুন।

দেশটির আজমানে উইমেন অ্যাসোসিয়েশন হলে সম্মাননা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ইয়াকুব সৈনিক। গেস্ট অব অনার ছিলেন আজমান রাজ পরিবারের সদস্য শেখ মোহাম্মদ সাঈদ রাশেদ হুমাইদ আল নুয়াইমি।

কামরুল হাসান জনি ও রোমানা বর্ণীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ, দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান, আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর কামাল, মুক্তিযোদ্ধা আমানুল কিবরীয়া, বাংলাদেশ সমিতি শারজাহ সাবেক সভাপতি শরাফত আলী, জনতা ব্যাংক আবুধাবির সিইও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, টেপ টেপ সেন্টের হেড অব গ্রোথ (বাংলাদেশ) সুদর্শন সুভাশীষ দাস, শিবলী আল সাদিক প্রমুখ।
 
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫২ জন সিআইপিকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরে প্রবাসী শিক্ষার্থী ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ