আসামি নির্যাতনের ঘটনায় ওসিসহ ১৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 29th, January 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পুলিশ হেফাজতে রেখে রোকন মোল্লা (৩৬) নামে এক ট্রাকচালকে নির্যাতনের অভিযোগে ওসি আসিফ মুহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম ও ওসি এনামুল হকসহ ১৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) সিরাজগঞ্জ আমলী আদালতে ট্রাকচালক রোকন মোল্লা নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। রোকন পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার নেছরাপাড়া এলাকার রহমত মোল্লার ছেলে।
এই মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- সলঙ্গা থানার সাবেক তদন্ত ওসি শেখ তাজউদ্দিন আহমেদ, উল্লাপাড়া থানার সাবেক সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুস ছালাম, সাব-ইন্সপেক্টর (সলঙ্গা থানা) মুনসুর রহমান, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর (সলঙ্গা) আব্দুল কুদ্দুসসহ ১৫ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মে ২০২৪ এ ট্রাক নিয়ে রোকন মোল্লা বগুড়া থেকে পাবনা যাওয়ার সময় রাত ১টায় ঢাকা-নগরবাড়ি মহাসড়কের কাওয়াক মোড়ে রাত্রিকালীন ডিউটিরত পুলিশের পিক-আপের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মুহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম ড্রাইভার রোকন মোল্লার দিকে রিভলভার তাক করে। ট্রাকচালক ভয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে সিরাজগঞ্জ রোডের দিকে দ্রুত ছুটতে থাকলে পুলিশের গাড়িও পিছু নেয়। খবর পেয়ে সলঙ্গা থানার সাবেক ওসি এনামুল হক ওই ট্রাকটি ধরতে পিছু নেয়। পরে সলঙ্গা থানার রাজশাহী-পাবনা মহাসড়কের হরিণচড়ায় ট্রাকচালক রোকন মোল্লাকে আটক করে মারধর করে এবং বিবস্ত্র অবস্থায় তাকে রাস্তার পাশে পুকুরে নামিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে পুকুর থেকে তুলে অভিযুক্ত আসামি সলঙ্গা থানার সাবেক ওসি এনামুল হক উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মুহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম ট্রাকচালক রোকন মোল্লাকে গুলি করে মেরে ফেলতে বলে।
পরে আসিফ তার ডান পায়ে গুলি করে সলঙ্গা থানায় নিয়ে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তী অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা অর্থপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতে ট্রাকচালক রোকন মোল্লার ডান পা কেটে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী রোকন মোল্লা বলেন, “উল্লাপাড়া থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম পিস্তল দিয়ে আমাকে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমার একটি পা নেই।”
এ সময় তিনি দাবি করেন দীর্ঘদিন মিথ্যা মামলায় কারাগারে থাকার কারণে তার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে দেরি হয়েছে। দীর্ঘদিন পর কারাভোগ শেষ করে জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি মামলা করেছেন। ট্রাকচালক রোকন মোল্লা তার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেছেন।
অভিযুক্ত উল্লাপাড়া থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম (বর্তমানে রাজবাড়ী জেলায় রেলওয়ে পুলিশে কর্মরত) বলেন, “মামলার বিষয়টি শুনেছি। বাদী নিজেই একজন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের শীর্ষ নেতা। তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয় জেলায় কমপক্ষে ২৮টি মামলা রয়েছে। ওইদিন ডাকাতের ঘটনায় তাকে ধরতে পায়ে গুলি করা হয়।”
সলঙ্গা থানার সাবেক ওসি এনামুল হক (বর্তমান পাবনা জেলার সিআইডি শাখায় কর্মরত) বলেন, “ওইদিন রোকন মোল্লা দলবল নিয়ে ডাকাতি করতে এসেছিল। রোকন একজন দুর্ধর্ষ ডাকাত। ঘটনার দিন ডাকাতি করার সময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। একদল পুলিশকে ট্রাকের নিচে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন রোকন মোল্লা। পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে তাকে ধরতে পায়ের গুলি করে।”
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো.
ঢাকা/রাসেল/ইমন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স র জগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।