গোপালগঞ্জে আমরা নিরাপদ নই: বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
Published: 1st, February 2025 GMT
মেসে হামলা চালিয়ে আট শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুজ চত্বর, নিউমার্কেট ও প্রধান ফটক চত্বর প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘আমার ভাইয়ের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ছাত্রলীগ জঙ্গি, শেখ হাসিনার সঙ্গী’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত বলেন, “সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হচ্ছে। এখানকার স্থানীয় ইজিবাইক চালক, রিকশা চালক, বাড়ির মালিক, দোকানদার থেকে শুরু করে অধিকাংশ মানুষ আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী দেখলেই সমন্বয়ক ট্যাগ দিয়ে হামলা করে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার আটজন শিক্ষার্থীকে সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে বর্বর সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গোপালগঞ্জে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নই। বাংলাদেশ সরকারকে বলব, আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেন।”
দ্রুত বিচার দাবি করে পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু দারদা বলেন, “আমাদের ভাইদের ওপর স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এটা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের কাজ। এ ঘটনায় একজন সন্ত্রাসীকে কেবল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা সব সন্ত্রাসীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, আমরা আপনাদের আশ্বাসের উপর আস্থা রাখতে পারছি না। ইতোপূর্বে আমাদের ভাইদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তার বিচার করতে পারেনি প্রশাসন।”
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সব শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থাসহ নারীদের জন্য হলে শতভাগ আবাসিকতার দাবি জানান তিনি।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ