ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে সম্প্রতি জাঁকজমকপূর্ণ প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েব সাজ্জাদানশীন সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারীর সভাপতিত্বে  উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী।
প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন– সৈয়দ এরহাম হোসাইন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড.

শেখ সাদী, ভারতের অধ্যাপক ড. শেখ মকবুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আহমেদুল কবির, সহযোগী অধ্যাপক ধিমান চন্দ্র বর্মণ, সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহমান মইশান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন– দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুম আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মুনমুন নেসা চৌধুরী, সংগীত বিভাগের নাদিরা ইসলাম, মিশকাতুল মোমতাজ ও কৌশিক আহমেদ, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ মুহিউদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন– চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুল আচফিয়া, শিক্ষাবিদ ড. শামসুদ্দীন শিশির ও চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা সৈয়দ আয়াজ মাবুদ।
প্রধান অতিথি হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘সুফি চিন্তাধারা শুধু আধ্যাত্মিক উন্নয়নের পথপ্রদর্শক নয়, এটি মানবিকতা, সহনশীলতা এবং সামাজিক সংহতির মজবুত ভিত্তি গড়ে তোলে।’
প্রকাশনা উৎসবে সুফি সাহিত্য ও আধ্যাত্মিক চেতনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘সুফি দর্শন মানুষের নৈতিক ও আত্মিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করে। এই প্রকাশনা উৎসব জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে এবং সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
কর্মসূচির মধ্যে ছিল ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান, জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা, শিক্ষা পরিবার সমাবেশ, থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা সেমিনার, এথিকস অলিম্পিয়াড ও তাকদিস সংলাপ, মেধাবিকাশ শিক্ষা উৎসব, বিজ্ঞান বক্তৃতা ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড। আরও ছিল আন্তর্জাতিক ছবি প্রদর্শনী, মাইক্রো, সিএনজি ও সেলাই মেশিন বিতরণ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ড্রাইভারদের মধ্যে সনদ বিতরণ এবং প্রেমের তরী পুনর্মিলনী ও সম্মাননা প্রদান, সুফি নাটক ‘পাখিদের বিধান সভা’ প্রদর্শনী।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ফসলের ক্ষেতে আশার আলো

বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল। 
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সফল’ আন্দোলনের পর কুয়েট পেল অন্তর্বর্তী ভিসি
  • কুয়েটে অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ
  • কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হলেন অধ্যাপক হযরত আলী
  • কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হলেন অধ্যাপক হযরত আলী
  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো