পাচার করার জন্য ব্যক্তিগত গাড়িতে করে নেওয়া হচ্ছিল ১১টি বিপন্ন প্রজাতির মুখপোড়া হনুমান। গোপন খবরে ধরা পড়েন তিন পাচারকারী। তাঁদের শাস্তি দেওয়া হয়। আর উদ্ধার করা হনুমানগুলো পাঠানো হয় গাজীপুরের শ্রীপুরের সাফারি পার্কে।

আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ ঢাকার বন্য প্রাণী পরিদর্শক নিগার সুলতানা।

ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম‍্যাজিস্টেট অনিক সাহা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিনজনকে ৩ মাস করে কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাঁদের ২০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নিগার সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার স্বামীবাগের রাস্তায় একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ১১টি মুখপোড়া হনুমান পাচার করা হচ্ছে বলে তাঁরা খবর পান। পরে বন‍্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ ঢাকার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তারের নির্দেশে সেখানে অভিযান চালানো হয়। প্রাণীগুলো উদ্ধার করা হয়। পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়। পাচারকারীরা এগুলোকে চট্টগ্রাম থেকে বিক্রির জন্য কুষ্টিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে প্রাণীগুলোকে লালন–পালনের জন্য গাজীপুরের সাফারি পার্কে পাঠানো হয়।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে ১১টি মুখপোড়া হনুমান সাফারি পার্কে আনা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এগুলোকে আপাতত কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গত ৮ জানুয়রি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে কুষ্টিয়ায় পাচারকালে ৮টি মুখপোড়া হনুমান উদ্ধার করা হয়। সেগুলোও এই সাফারি পার্কে পাঠানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী