সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পাহাড়ে শান্তি অর্জন সম্ভব
Published: 7th, February 2025 GMT
নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পাহাড়ে শান্তি অর্জন করা সম্ভব। অতীতে অনেক কিছু ভুল হয়েছে, সেই ভুলভ্রান্তির সবকিছু ভুলে গিয়ে সবাই মিলে শান্তির পথ খুঁজতে হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে বান্দরবান বৌদ্ধ অনাথালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বান্দরবানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তাঁর হাত ধরে বৌদ্ধ অনাথালয়টি গড়ে উঠেছে।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বৌদ্ধ অনাথালয়ে এসে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তিনি ঘুরে ঘুরে তাঁর নির্মিত ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস, ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্বোধনী ফলক দেখেন। মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করা অনাথালয়টিতে বর্তমানে দুই শতাধিক দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত দুর্গম এলাকার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। বান্দরবানে সেনাবাহিনীর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড সদর দপ্তরের পাশেই অনাথালয়টি অবস্থিত।
পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন অনাথালয়ের উন্নয়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কিছু করার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেছেন। এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই, জেলা প্রশাসক শারমিন আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন অনাথালয় বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ পঞানন্দ মহাথের।
অনাথালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা বরাবরই শান্তি ও সম্প্রীতিপূর্ণ ছিল। হঠাৎ করে পরিস্থিতি খারাপ হলো। যারা বিপথে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসারও তিনি আহ্বান জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত