অটোরিকশা থামিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় এক যুবদল কর্মীর বুকে ও পায়ে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের নজরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ মিজানুর রহমান (৩৯) উপজেলার বজরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চাঁদপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্যার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়নে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাটি কাটা নিয়ে যুবদল কর্মী মিজানের সঙ্গে পাশের ইউনিয়নের কিছু যুবকের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে কয়েক দিন আগে মিজানের অনুসারী কিছু যুবক প্রতিপক্ষের একজনকে মারধর করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। স্বজনদের ধারণা, এই বিরোধের জের ধরেই মিজানুরকে গুলি করা হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ যুবকের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের নজরপুর গ্রামে কয়েকজন দুর্বৃত্ত মিজানুর রহমানের অটোরিকশার গতিরোধ করে তাঁর ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা তাঁর বুকে ও পায়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বজনেরা তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যান।

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, যুবদলের কর্মী মিজানুর রহমানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তবে কী কারণে কারা তাঁর ওপর গুলি ছুড়েছে, তা তিনি জানতে পারেননি।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাটির ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ যুবক ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা