পুরান ঢাকার ব্যবসার সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি
Published: 8th, February 2025 GMT
অসহনীয় যানজট, অপ্রতুল অবকাঠামো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অপর্যাপ্ত ঋণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, কর–ভ্যাট বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু বিষয়কে পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ ও সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পুরান ঢাকার ব্যবসা–বাণিজ্যের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। আজ শনিবার পুরান ঢাকার লালবাগের মীম কমিউনিটি সেন্টারে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তারা বলেন, রাজধানীর ব্যবসার অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই তাঁরা এসব সমস্যার আশু সমাধান দাবি করেছেন। সভায় পুরান ঢাকার বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (গবেষণা) মো.
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ কর ও ভ্যাট ব্যবস্থার জটিলতা, ব্যবসার আকার, প্রকৃতি ও সক্ষমতা অনুযায়ী কর ব্যবস্থার সহজীকরণ, আমদানি-রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা নিরসন, বাস্তবভিত্তিক ভ্যাট হার নির্ধারণের ওপর জোর দেন। এ সময় তিনি বলেন, শত বছর ধরে পুরান ঢাকা ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হলেও যানজট, অবকাঠামোর অপ্রতুলতা এবং কর ও ভ্যাট প্রতিবন্ধকতার কারণে এখানকার উদ্যোক্তারা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এসব সমস্যা নিরসনে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন খুবই জরুরি।
অনুষ্ঠানে আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক পরিচালক মনোয়ার হোসেন করের হার কমিয়ে করের আওতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। সেই সঙ্গে করহার যৌক্তিক করার দাবি জানান তিনি।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, অসহনীয় যানজটের কারণে ব্যবসায়ীদের বিক্রি ক্রমাগত কমছে। কর ও ভ্যাটের উচ্চ হার এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার জটিলতার কারণে এই ক্ষতি আরও বাড়ছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে নগদ জমার হার ন্যূনতম ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা দরকার।
এ ছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে খাতভিত্তিক ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্যাকেজ ভ্যাট ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।
মতবিনিময় সভা শেষে পুরান ঢাকার ৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ঢাকা চেম্বারের সদস্যপদ দেওয়া হয়। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে এই সদস্যপদের সনদ তুলে দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ন ঢ ক র ব যবস ব যবস য় ব যবস থ সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল
২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার
সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।
কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।