জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ ফুচকা-চটপটির দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বটতলা এলাকায় কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিভিন্ন হারে চাঁদা দাবি করেন তাঁরা।

ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী ও ভুক্তভোগী দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী এসব দোকানদারের কাছে যান। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসা বন্ধ আছে বলে জানান। তবে তাঁদের প্রতিদিন এক হাজার বা দেড় হাজার টাকা করে দিলে নির্বিঘ্নে তাঁরা ব্যবসা করতে পারবেন এবং কোনো ধরনের সমস্যা হলে তাঁরা দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে দোকানদারেরা তৎক্ষণাৎ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরে যেকোনো সময় টাকা নিতে আসবেন বলে জানান।

বিষয়টি ছাত্রদলের অভ্যন্তরে জানাজানি হলে কয়েকজন নেতা-কর্মী এসব দোকানদারের কাছে যান এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছবি দেখান। এর মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সদস্য গোলাম রাব্বানী অর্ণবকে শনাক্ত করেন। গোলাম রাব্বানী বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে থাকেন। বাকিদের শনাক্ত করতে পারেননি। তবে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন বলে জানান তাঁরা।

এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ একটি ফুচকার দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁর দোকানে যান। একপাশে ডেকে নিয়ে গোলাম রাব্বানী (ছবি দেখে শনাক্ত) তাঁর কাছে দৈনিক এক হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় আরও কয়েকজন দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তিনি জানান।

আরেক দোকানদার বলেন, ‘আমার দোকানে কয়েকজন এসে চা-পানি খাওয়ার জন্য টাকা দাবি করেন। তাঁরা বলেন, ব্যবসা–বাণিজ্য করছেন, আমাদের কিছু টাকাপয়সা দেন চা-পানি খাওয়ার জন্য। আমি তখন বলি, টাকাপয়সা এখন নেই। তাঁরা পরে যেকোনো সময় টাকা নিতে আসবেন বলে জানান।’

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। এখন যদি কেউ আমার নাম করে এমন কাজ করে থাকে, তাহলে কী বলব। আমি এমন কোনো কিছু করিনি। সবকিছু তো আপনারা জানেন, একজনের নাম বলে অন্যজন এমন কাজ করে।’

আপনার ছবি দেখালে দোকানদারেরা আপনাকে শনাক্ত করেছেন, এমন প্রশ্ন করলে রাব্বানী বলেন, ‘যদি তাঁরা বলেন, আমার কী করার আছে। আমি ছিলাম না, এসব মিথ্যা।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে দেখব। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১০ ও ১১ মে সিটি ব্যাংকের সব সেবা বন্ধ থাকবে

ডেটা সেন্টার স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন করতে লেনদেনসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম দুই দিন বন্ধ রাখবে সিটি ব্যাংক। আগামী ৯ মে রাত ১২টা থেকে ১১ মে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে ব্যাংকটিকে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ–সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, ডেটা সেন্টার স্থানান্তর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আগামী ৯ মে রাত ১২টা থেকে ১১ মে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে সিটি ব্যাংককে সম্মতি দেওয়া হলো।

১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা সিটি ব্যাংকের গ্রাহক গত বছর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখে। ২০০৭ সালে ব্যাংকটির গ্রাহক ছিল ৬৮ হাজার। ব্যাংকটির কর্মকর্তার সংখ্যা এখন ৫ হাজার ৩২১ জন। দেশের সবচেয়ে বেশি সাত লাখ ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক রয়েছে সিটি ব্যাংকের। ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ডের ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত বছর শেষে ব্যাংকটির আমানত বেড়ে হয়েছে ৫১ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। আর ঋণ ছিল ৪৪ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। গত বছর শেষে হাজার কোটি টাকা মুনাফার মাইলফলক ছুঁয়েছে সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটি গত বছর শেষে সমন্বিত মুনাফা করেছে ১ হাজার ১৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত মুনাফার পরিমাণ ছিল ৬৩৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৩৭৬ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ বেড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ