আইএলটি২০ ফাইনালে গতকাল রাতে ডেজার্ট ভাইপার্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবাই ক্যাপিটালস। এই জয়টা ক্যাপিটালসের মালিকপক্ষ জিএমআর ও জেএসডব্লু গ্রুপের জন্য বিশেষ কিছু। ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টিতে প্রায় দেড় যুগ আগে নাম লেখালেও এবারই যে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেল।

আইএলটি২০–তে ক্যাপিটালসের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে ছেলেদের টি–টোয়েন্টি লিগে পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে ডিয়াজিও ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানাধীন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের শোকেসটাই শুধু ফাঁকা থেকে গেল।

এই কোম্পানির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসর থেকেই খেলে আসছে। অতীতে দলটিকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ক্রিস গেইল, রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে, কেভিন পিটারসেন, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ফাফ ডু প্লেসি, শেন ওয়াটসন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের মতো তারকারা। এখনো খেলে যাচ্ছেন বিরাট কোহলি। তাঁদের নিয়ে ২০০৯, ২০১১ ও ২০১৬ আইপিএলের ফাইনালে খেললেও ট্রফি ঘরে তোলা হয়নি।

আইপিএলের শুরু থেকে খেলে আসছে—এমন আট ফ্র্যাঞ্চাইজির সাতটিই ভারতের বাইরে দল কিনেছে। এশিয়ার শীর্ষ ধনী আম্বানি পরিবারের মালিকানাধীন ইন্ডিয়াউইন স্পোর্টস লিমিটেডের দল এমআই কেপটাউন তো পরশুই দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ২০–তে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য সব প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়ের কীর্তিও গড়ে ফেলেছে।

বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের নাইট রাইডার্স গ্রুপেরও আইপিএলের পাশাপাশি ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), আইএলটি২০ ও যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি) দল আছে। এই গ্রুপের ট্রফির সংখ্যা ৭।

সান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান কালানিধি মারানের দুই দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও সানরাইজার্স ইস্টার্ন কেপ আইপিএল ও এসএ২০ মিলে জিতেছে তিনটি ট্রফি। প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব কিংস ১৭ বছরের চেষ্টাতেও আইপিএল জিততে পারেনি। কিন্তু তাঁর আরেক দল সেন্ট লুসিয়া কিংস গত বছর সিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফির ছোঁয়া দিয়েছে।

ইন্ডিয়া সিমেন্টস, সারদা লজিস্টিকস ও লাইফ ইনস্যুরেন্স করপোরেশনের মালিকানাধীন সুপার কিংস ক্রিকেট গ্রুপের দল তিনটি—আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংস, এসএ২০–তে জোবার্গ সুপার কিংস ও এমএলসিতে টেক্সাস সুপার কিংস। শেষের দুটি দল এখনো শিরোপা না জিতলেও চেন্নাই সুপার কিংসের আছে পাঁচটি আইপিএল ও দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ টি–টোয়েন্টির ট্রফি।

রাজস্থান রয়্যালস ২০০৮ সালে জিতেছে প্রথম আইপিএলের শিরোপা। পরের বছর আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিলুপ্ত ফ্র্যাঞ্জাইজি ডেকান চার্জার্স। আর দিল্লি ক্যাপিটালসের ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দুবাই ক্যাপিটালস গতকাল জিতল আইএলটি২০। পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে এখন একমাত্র রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সেরই ছেলেদের লিগে কোনো শিরোপা নেই।

আইপিএলের শুরুতে দিল্লির ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম ছিল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। তখন মালিকানা ছিল শুধু জিএমআর গ্রুপের হাতে। ২০১৮ সালে জিএমআর গ্রুপ ৫০ শতাংশ শেয়ার জেএসডব্লু গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেই বছর দলের নামও পরিবর্তন করা হয়। ভারতের রাজধানীর দল হওয়ায় নাম রাখা হয় দিল্লি ক্যাপিটালস। এরপর দুই গ্রুপ মিলে ভারতের বাইরেও ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনতে শুরু করে।

আইপিএলের দিল্লি ক্যাপিটালস ছাড়াও এমএলসিতে সিয়াটল ওরকাস, আইএলটি২০–তে দুবাই ক্যাপিটালস ও এসএ২০–তে প্রিটোরিয়া ক্যাপিটালস নামে ক্রিকেট দল আছে। দলগুলোর মধ্যে সবার আগে জিএমআর ও জেএসডব্লু গ্রুপকে শিরোপার স্বাদ দিল দুবাই ক্যাপিটালস।    

ছেলেদের লিগে কখনোই ট্রফি জিততে না পারা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মালিকানা ছিল ভারতের বৃহত্তম অ্যালকোহল কোম্পানি ইউনাইটেড স্পিরিটসের চেয়ারম্যান ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী বিজয় মাল্যর হাতে। ২০১৫ সালে মালিকানায় হাতবদল হয়। দলটি কিনে নেয় ডিয়াজিও ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। মালিকানা বদলের পর দলের নাম একই থাকলেও লোগোয় পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু এত বছরেও আইপিএল–ভাগ্য বদলায়নি।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অবশ্য একই নামে মেয়েদের আইপিএল (ডব্লুপিএল) জিতেছে। গত বছরের ফাইনালে তারা জিএমআর ও জেএসডব্লু গ্রুপের মালিকানধীন দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে দিয়েছে।

আইপিএলে বর্তমানে ১০টি দল খেলছে। এর মধ্যে র‍য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও ২০২২ আসরের চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটানসেরই ভারতের বাইরে কোনো ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজি নেই।

গুজরাট টাইটানসের মতো অপেক্ষাকৃত আরেক নবীন দল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। এই দলের মালিক কলকাতার ধনকুবের সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। এসএ২০–তে ডারবান সুপার জায়ান্টস নামেও তাঁর একটি দল আছে। এ ছাড়া কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব মোহনবাগানের মালিকানাও এখন তাঁর হাতে।

আইপিএলের বেশির ভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক তাঁদের পরিসর বাড়ালেও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আপাতত এ ধরনের পরিকল্পনা নেই। এ ব্যাপারে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) রাজেশ মেনন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ড ছড়িয়ে দেওয়ার অর্থ শুধু ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করা নয়; বার ও ক্যাফের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে আমাদের পণ্য ও দ্রব্যের পরিসর বাড়াতে পারি। এই মুহূর্তে আমরা খেলাধুলার দৃষ্টিকোণ থেকে আরসিবিকে প্রসারিত করছি না। তবে অন্যান্য সম্প্রসারণকাজ করব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ব ই ক য প ট লস ফ র য ঞ চ ইজ ইন ড য়

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপে আবেদনের সময় বৃদ্ধি, আইএলটিএসে ৬.৫ অথবা টোয়েফলে ৮৪ হলে আবেদন

অস্ট্রেলিয়ার অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদনের সুযোগ আরও চারদিন। সময় বাড়ানোর এ কথা জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছে বাংলাদেশে অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিনের ফেসবুক পেজে। আবেদনের শেষ সময় ছিল ৩০ এপ্রিল। এখন শিক্ষার্থীরা ৪ মে পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক বিষয় ও বাণিজ্য বিভাগে এ বৃত্তি দেওয়া হয়। এ বৃত্তি পেলে স্বাস্থ্য, ডেভেলপমেন্ট, পরিবেশ, সাসটেইনেবিলিটি, ট্রেড, পাবলিক পলিসি, অর্থনীতি, গভর্ন্যান্স, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্লু ইকোনমিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পড়া যাবে দেশটিতে। ২০২৫ সালের জন্য বিশ্বের ৫৫ টি দেশের ১ হাজার ৫৫১ জন অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ পাবেন। ২০২৩-২০২৪ প্রোগ্রামে অষ্ট্রেলিয়া ২৭০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে এ বৃত্তির জন্য।

অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের আবেদন শুরু হয় গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। বাংলাদেশিসহ বিশ্বের আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ আগামী ৪ মে, রোববার পর্যন্ত।
অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডসে সুযোগ-সুবিধা—

সম্পূর্ণ বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ

বই ও পড়াশোনার আনুষঙ্গিক জিনিসের খরচ

বিমানে ইকোনমি ক্লাসে যাতায়াতের টিকিট

বসবাসের খরচ ও স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা

কোর্স ভেদে ফিল্ডওয়ার্কের সুযোগ-সুবিধাও আছে।

আরও পড়ুনচীনের প্রেসিডেনশিয়াল স্কলারশিপ, প্রথম বছরে ১০ হাজার চায়নিজ ইউয়ান ২০ এপ্রিল ২০২৫

আবেদনের যোগ্যতা—

১৮ বছরের ঊর্ধ্বে বাংলাদেশের নাগরিকেরা আবেদন করতে পারেন

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব যাদের রয়েছে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন না

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকের সঙ্গে বাগদান বা বিবাহিত হলে আবেদন করা যাবে না

কোনো সামরিক সেবার সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে না

আইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬ দশমিক ৫ হতে হবে এবং প্রতিটি ব্যান্ড স্কোর হতে হবে ৬ অথবা

ইন্টারনেট টেস্টে টোয়েফলে স্কোর কমপক্ষে ৮৪ (আইবিটি) অথবা

পিটিই অ্যাকাডেমিক স্কোর ৫৮।

আবেদনপদ্ধতি—

আবেদনের বিস্তারিত জানা যাবে ‌অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

১৮ বছরের ঊর্ধ্বে বাংলাদেশের নাগরিকেরা আবেদন করতে পারেন অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের জন্য

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপে আবেদনের সময় বৃদ্ধি, আইএলটিএসে ৬.৫ অথবা টোয়েফলে ৮৪ হলে আবেদন