চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেখা গেল থানার ওসি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের। গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার জে.কে পোল্লাডাঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন মাঠে ‘স্বর্ণ কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দৃশ্য দেখা যায়।

ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহিনুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক (চুটু)। একই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাব্বুল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আতাউর রহমান, দলদলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চু, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন যুবদল নেতা সামিরুল ইসলাম গাজী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘খেলা মানে আনন্দ। দল-মত নির্বিশেষে এ টুর্নামেন্ট সফল করতে সবার প্রতি অনুরোধ রইল সহযোগিতা করার। এখন কোনো দলীয় সরকার ক্ষমতায় নেই, আছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাই খেলাটি যাতে সুষ্ঠুভাবে শেষ হয় সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।’

সভাপতির বক্তব্যে ওসি মো. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান যুব সমাজ মাদক ও মোবাইল ফোনে আসক্ত। তারা মোবাইলে গেমস খেলে। কিন্তু আমাদের এমন খেলা খেলতে হবে যাতে শরীরের ঘাম ঝরবে। এতে দেহ-মন সুস্থ থাকবে।’

এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

স্থানীয় ব্যক্তি মো. মুনসুর আলী লেখেন, ‘ধন্যবাদ তোমাদেরকে টুর্নামেন্ট কমিটিকে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মিলে তোমরা খেলাটাকে পরিচালনা করছ।’ 

শাহ জামাল খান মন্তব্য করেন, ‘ভোলাহাটেও তাহলে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হলো। কাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাব সেটাই চিন্তায় পড়ে গেলাম। উনাদের না, পুনর্বাসনকারীদের?’ 

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভোলাহাট থানার ওসির মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ ফ টবল ট র ন ম ন ট আওয় ম ল গ ব এনপ র রহম ন উপজ ল আওয় ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ