নব্বইয়ের দশকে তিন বন্ধু মিলে আবাসন ব্যবসা শুরু করেন। রাজধানী ঢাকার বিজয়নগরে হাতে নিলেন প্রথম প্রকল্প। তবে প্রকল্প এগিয়ে নিতে টাকাপয়সার বন্দোবস্ত হচ্ছে না। এমন সময় একজন ব্যবসায়ী এগিয়ে এলেন। নগদ ২০ লাখ টাকা দিয়ে একটা ফ্লোর (তলা) ও একটা গুদামের বুকিং দিলেন। তারপর থেকে উদ্যোক্তাদের আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

৩০ বছর আগে ১৯৯৬ সালে যাত্রা শুরু করা ট্রপিক্যাল হোমস এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত প্রায় এক শ আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব প্রকল্পের ২ হাজার ৪০০ অ্যাপার্টমেন্ট গ্রাহকদের বুঝিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে ৫০ লাখ বর্গফুট বাণিজ্যিক জায়গা হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে তাদের ৩০টি প্রকল্প চলমান।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ মঙ্গলবার রাতে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজেদের ৩০ বছর উদ্‌যাপন করেছে ট্রপিক্যাল হোমস। একই অনুষ্ঠানে দেশের প্রথম ৪৫ তলা ভবনের অবিকল নকশা (ডামি) আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়। ঢাকার মালিবাগে ৪৬ কাঠা জমির ওপর ভবনটি নির্মাণ করছে ট্রপিক্যাল হোমস।

ট্রপিক্যাল হোমসের অনুষ্ঠানে গ্রাহক থেকে শুরু করে জমির মালিক, স্থপতি, প্রকৌশলী, আবাসন ব্যবসায়ী, ব্যাংকার, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন গণমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো.

ছিদ্দিকুর রহমান সরকার, আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

তিন বন্ধু মিলে শুরু করলেও কিছুদিন পর তাঁদের একজন ট্রপিক্যাল হোমসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর দুই বন্ধু চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ রবিউল হক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যান। রেজাউল করিম প্রয়াত হলে তাঁর ছেলে তানভীর রেজা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে এসেছেন।

৩০ বছর উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে মূল কান্ডারি ছিলেন প্রতিষ্ঠানের এমডি শেখ রবিউল হক। আবৃত্তি দিয়ে শুরু করেন তাঁর বক্তব্য। বললেন, ‘মানুষের সেবা করার জন্য আমরা আবাসান ব্যবসা শুরু করেছিলাম। আজ অবধি সেই যাত্রা অব্যাহত আছে।’ তিনি বলেন, ‘তিন দশকের ব্যবসায় আমরা কখনো ঋণে জর্জরিত হইনি। এভাবেও যে ব্যবসা করা যায়, সেটি আমরা দেখিয়েছি।’

শেখ রবিউল হক আরও বলেন, ‘ঢাকাকে আমরা বনসাই বানিয়ে রেখেছি। এখনো বেশির ভাগ ভবনই ৬-৭ তলা উচ্চতার। অথচ ঢাকার ভবনগুলো অন্তত ২৫ তলা উচ্চতার হওয়া উচিত। ১০০-১৫০ তলা ভবনও হতে হবে। কারণ, আমরা চাই না কোনো কৃষিজমি নষ্ট হোক।’

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের বেশ কয়েকজন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। তার মধ্যে রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘ট্রপিক্যাল হোমসের সম্পর্কে এখন পর্যন্ত রিহ্যাবে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তারা ভালো কোম্পানি। মুনাফার চেয়ে মানুষের সুযোগ-সুবিধাই তারা বেশি দেখছে।’

রাজউক চেয়ারম্যান মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, ‘ঢাকা শহর সবার। এখানে আড়াই কোটি মানুষ বসবাস করেন। ঢাকার ইতিহাস চার শ বছরের। এই সময়ে ঢাকার অনেক ক্ষতি হয়েছে; দূষণ হয়েছে। এখন আমরা সেটি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকায় ১০০ তলা ভবন করার চেষ্টা করছি। তবে রাজউকের নিয়মনীতির সঙ্গে মিলছে না। কারণ, জমির আয়তন ছোট। তাই আমরা এ বিষয়ে নিয়মনীতি কী করা যায়, সেটি নিয়ে কাজ করছি।’

রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ নিয়ে ভুলভ্রান্তি আছে। অচিরেই আমরা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা চূড়ান্ত করব। সেখানে বিভিন্ন এলাকায় ভবন নির্মাণ নিয়ে যেসব বৈষম্য আছে, সেটি থাকবে না।’

স্থপতি রফিক আজম বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান বেশ আওয়াজ দিয়ে কাজ করে থাকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ট্রপিক্যাল হোমস চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সব সমস্যার সমাধান করেই ৫০-১০০ তলা ভবন বানাতে হবে।

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে ৪৫ তলা টিএ টাওয়ারের নকশা উন্মোচন করা হয়। এই ভবনের ৩ লাখ বর্গফুট জুড়ে হবে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। এ ছাড়া বিপণিবিতান, অফিস, বিলাসবহুল হোটেল, সুইমিংপুল, ইনডোর পার্ক, ব্যায়ামাগার, হেলিপ্যাড ইত্যাদি থাকবে। ভবনের নির্মাণকাজ ২০২৯ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সবশেষে বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তানভীর রেজা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প ন ব যবস র জউক

এছাড়াও পড়ুন:

ডিএসইতে ৭৫ শতাংশ শেয়ার-মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন

চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনে শেষে ডিএসইতে এ দিন ৩০০টি বা ৭৫.৩৮ শতাংশের বেশি শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরপতন হয়েছে।

এ দিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন কমলেও সিএসইতে কিছুটা বেড়েছে। তবে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।

আরো পড়ুন:

৭ কোটি টাকা সংগ্রহে লিও আইসিটি ক্যাবলসের কিউআইও’র আবেদন

বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আইসিএসবির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকাল থেকেই ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেনের শুরু হয়। লেনদেনের শেষ হওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। তবে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক কমে গেছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৪.৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬১ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২.৩৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২১.৯৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪৫টি কোম্পানির, কমেছে ৩০০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৩টির।

ডিএসইতে মোট ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৯.৫৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭.৯৭ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২২৫ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ২.১৬ পয়েন্ট কমে ৮৯৬ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৪.২৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৬৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪২টি কোম্পানির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫টির।

সিএসইতে ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
 

ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ