শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় একই রশিতে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া কাঁঠালতলা এলাকা থেকে পোশাক শ্রমিক স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মারা যাওয়া দম্পতি হলেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বড়ইতলা গ্রামের মোস্তফার  ছেলে শাওন আহম্মেদ ও একই উপজেলার জমাদ্দার বাড়ি গ্রামের শাহ-আলম মাতব্বরের মেয়ে হাফিজা আক্তার। তারা দু’জনেই আশুলিয়ার দ্য রোজ ড্রেসেস নামের পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫ মাস আগে আশুলিয়ার কাঁঠালতলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন শাওন-হাফিজা দম্পতি। সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এক প্রতিবেশী জানালা দিয়ে তাদের কক্ষে একই রশিতে দু’জনকে ঝুলতে দেখেন। তাঁর চিৎকারে ওই ফ্ল্যাটের অন্য প্রতিবেশীরা সেখানে যান এবং বাড়িওয়ালাকে খবর দেন। বাড়িওয়ালা এসে আশুলিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কক্ষের দরজা ভেঙে ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

বাড়ির মালিক আফাজ উদ্দিন জানান, তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল কিনা জানেন না। কী কারণে তারা এই পথ বেছে নিয়েছেন, বুঝতে পারছেন না। 

আশুলিয়া থানার এসআই জসিম উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছেন, তবে কী কারণে করেছেন, তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ