নিখোঁজের দু’দিন পর শ্রীপুরের গভীর বনে মিলল অটোরিকশাচালকের লাশ
Published: 11th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের দু’দিন পর গজারি বন থেকে ফালান মিয়া (২৫) নামে এক অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের গভীর বন থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। ফালান ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর ইউনিয়নের চারবাড়িয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকার বাদল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন।
স্বজন জানান, রোববার সকালে ফালান অটোরিকশা নিয়ে বের হন। ওই দিন রাতে বাসায় না ফেরায় তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ফালানের স্ত্রী রিনা আক্তার শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীপুর থানা-পুলিশের মাধ্যমে বেলতলী গ্রামের গজারি বনে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পান। সেখানে গিয়ে মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতসহ ফালানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু আশেপাশে কোথাও তাঁর অটোরিকশা পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে গেছে।
শ্রীপুর থানার এসআই মাজাহারুল ইসলাম জানান, স্থানীয় আব্বাস উদ্দিন বনের ভেতর গরু চরাতে এসে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তিনি এলাকার লোকজনকে ডাকাডাকি করে থানায় খবর দেন। মরদেহের মুখে ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করেছে।
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।