গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের দু’দিন পর গজারি বন থেকে ফালান মিয়া (২৫) নামে এক অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের গভীর বন থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। ফালান ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর ইউনিয়নের চারবাড়িয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকার বাদল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন।

স্বজন জানান, রোববার সকালে ফালান অটোরিকশা নিয়ে বের হন। ওই দিন রাতে বাসায় না ফেরায় তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ফালানের স্ত্রী রিনা আক্তার শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীপুর থানা-পুলিশের মাধ্যমে বেলতলী গ্রামের গজারি বনে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পান। সেখানে গিয়ে মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতসহ ফালানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু আশেপাশে কোথাও তাঁর অটোরিকশা পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে গেছে।

শ্রীপুর থানার এসআই মাজাহারুল ইসলাম জানান, স্থানীয় আব্বাস উদ্দিন বনের ভেতর গরু চরাতে এসে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তিনি এলাকার লোকজনকে ডাকাডাকি করে থানায় খবর দেন। মরদেহের মুখে ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করেছে।

শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ