সময় ভালো যাচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটির। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কিছুটা ব্যাকফুটে আছে রিয়াল মাদ্রিদও। দলটির আবার রক্ষণ ইনজুরি জর্জরিত। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে অফের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে লস ব্লাঙ্কোসদের তাই হারিয়ে দেওয়ার ভালো সুযোগ ছিল সিটিজেনদের। দু’বার এগিয়ে গিয়ে সুযোগও তৈরি করেছিল ম্যানসিটি। কিন্তু কামব্যাক জায়ান্ট রিয়ালের কাছে শেষ মিনিটের গোলে ৩-২ গোলে হেরেছে পেপ গার্দিওলার দল। 

মঙ্গলবার রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে একটার পর একটা সুযোগ তৈরি করতে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু প্রথম সুযোগই কাজে লাগিয়ে থিবো কর্তুয়ার জালে বল পাঠিয়ে দেয় ম্যানসিটি। জ্যাক গ্রেলিসের বাড়ানো দারুণ বল বুক দিয়ে ধরে আর্লিং হালান্ডকে শট নেওয়ার সুযোগ করে দেন জোসকো গার্দিওল। গোল করতে ভুল করেননি সিটিজেন স্ট্রাইকার।

ম্যাচের ৬০ মিনিটে ওই গোল শোধ করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ভালভার্দের জোরের ওপর নেওয়া ফ্রি কিক ফিরে আসে রিয়াল মিডফিল্ডার দানি সেবায়োসের কাছে। বক্সে বল বাড়ান তিনি। এমবাপ্পে ভলি নিলেও তা ঠিকমতো লাগেনি। তবে গোল আটকায়নি তাতে। এরপর আবার লিড নেয় ম্যানসিটি। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার দল। 

মনে হচ্ছিল শেষ সময়ের ওই গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়বে ম্যানসিটি। তবে শেষ বাঁশির আগে ছেড়ে না দেওয়া রিয়াল ৬ মিনিট পরই পুনরায় সমতায় ফেরে। গোলটি ভিনিসিয়াস জুনিয়রের হতে পারত। তবে ভিনির নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন ম্যানসিটি গোলরক্ষক এদেরসন। পরের শটে জালে বল পাঠিয়ে দেন বদলি নামা ব্রাহিম দিয়াজ।

এরপর ৯২ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম। তাকেও গোল করার ভিনি। বক্সের মাথায় ভিনিকে আটকাতে এগিয়ে আসেন ম্যানসিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদেরসন। ভিনি তার মাথার ওপর দিয়ে ভলি করে ফাঁকায় থাকা বেলিংহামকে বল পাঠান। গোল করতে বেলিংহামের কোন বাধার মুখেই পড়তে হয়নি। রদ্রির ব্যালন ডি’অর পাওয়া নিয়ে ইতিহাদে ভিনিকে স্লেজিং করা হয়েছে ম্যাচজুড়ে। ম্যাচের সেরা হয়েই ভিনি এর জবাব দিয়েছেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল য় ন এমব প প

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল

বাঁশির সঙ্গে সখ্য সেই শৈশবে। গ্রামে যাত্রাপালায় গান করতেন আর বাঁশির সুরে ছড়াতেন মুগ্ধতা। জীবন-জীবিকার তাগিদে একসময় বেছে নেন রিকশাচালকের পেশা। গ্রাম ছেড়ে থিতু হন ব্যস্ত শহরে। তবে বাঁশের বাঁশিকে হাতছাড়া করেননি শফিকুল ইসলাম (৪৫)।

যানজটে গতি থামতেই রিকশার হ্যান্ডেল ছেড়ে শফিকুল কোমর থেকে হাতে নেন প্রিয় বাঁশি। হর্নের কর্কশ ধ্বনি এড়িয়ে তখন বাতাসে ভাসে সুরের মূর্ছনা। বেখেয়ালি যাত্রী আর পথচারীরা হঠাৎ মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকেন বাঁশিওয়ালার দিকে।

দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বাঁশির সঙ্গে মিতালি গড়েছেন শফিকুল। সেই বাঁশির সুরেই যেন তাঁর জীবন বাঁধা। অভাব, দুর্দশা আর দারিদ্র্যও এ বন্ধন থেকে তাঁকে আলাদা করতে পারেনি। রিকশার প্যাডেলের ছন্দে তাঁর ঠোঁটে বিমূর্ত হয়ে বাঁশির করুণ সুর। বগুড়া শহরের পথচারীদের কাছে তিনি ‘বাঁশিওয়ালা রিকশাওয়ালা’ হিসেবে পরিচিত।

শফিকুলের পৈতৃক ভিটা বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শালিখা গ্রামে। তবে জীবিকার তাগিদে থাকেন বগুড়া শহরের মালতীনগর এলাকার একটি গ্যারেজে। গত রোববার বিকেলে তাঁর দেখা মেলে বগুড়া শহরের কোর্ট হাউস স্ট্রিটের ব্যস্ত সড়কে। শেষ বিকেলে যানজটে যখন পথচারীরা বিরক্ত, তখন বাতাসে ভেসে আসে ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’ ভাওয়াইয়া গানটির সুর।

দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বাঁশির সঙ্গে মিতালি গড়েছেন শফিকুল। রিকশার প্যাডেলের ছন্দে তাঁর ঠোঁটে বিমূর্ত হয়ে বাঁশির করুণ সুর। বগুড়া শহরের পথচারীদের কাছে তিনি ‘বাঁশিওয়ালা রিকশাওয়ালা’ হিসেবে পরিচিত।

এরই একফাঁকে আলাপ হয় শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। কথায় কথায় তিনি জানান, দারিদ্র্যের কারণে পঞ্চম শ্রেণির গণ্ডি পেরোতে না পেরোতেই পড়ালেখা বন্ধ করতে হয়। এরপর জড়িয়ে পড়েন গ্রামের একটি যাত্রাপালার দলে। ‘কাজলরেখা’, ‘সাগরভাসা’, ‘গুনাইবিবি’, ‘রাখালবন্ধু’, ‘রূপবান’সহ নানা লোককাহিনিনির্ভর যাত্রাপালায় অভিনয় ও গান করেছেন। শুধু তা–ই নয়, গানের সুরে হারমোনিয়ামও বাজাতেন। এসবের ফাঁকে ফাঁকে টুকটাক রিকশা চালাতেন তখন।

পরিবারের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, ২০০০ সালে বিয়ে করেন। স্ত্রী মোর্শেদা গৃহিণী। তাঁদের তিন মেয়ে—শরীফা, শম্পা ও শাকিলা। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী ও দুই মেয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। মাসে দুবার তিনি বাড়িতে যান। শফিকুলের দাবি, বগুড়া শহরে রিকশা চালিয়ে দিনে পান ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। থাকা-খাওয়া ও রিকশার জমা খরচ ছাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা থেকে যায়। সেই টাকায় চলে সংসার।

শুরুতে শহুরে জীবন শফিকুলের একদম ভালো লাগত না, মন পড়ে থাকত সেই গ্রামে। মন ভালো রাখতে রিকশা চালানোর সময় গুনগুন করে গাইতেন। এর মধ্যে শহরের রাস্তায় একদিন এক বাঁশিওয়ালার সঙ্গে তাঁর দেখা। তাঁর কাছ থেকে উপার্জনের ৮০ টাকা দিয়ে একটি বাঁশি কেনেন তিনি। এরপর রাতে গ্যারেজে শুয়ে সেই বাঁশিতে সুর তোলেন। এখন বাঁশি তাঁর নিত্যসঙ্গী।

বাঁশি বাজাতে বাজাতে রিকশা চালানো অভ্যাস হয়ে গেছে জানিয়ে শফিকুল বলেন, যানজটে আটকা পড়লে বাঁশিতে সুর তোলেন। যাত্রী না পেলে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে একমনে বাঁশি বাজান। সুর শুনে যাত্রীরা ১০-২০ টাকা বেশি ভাড়া দেন কখনো কখনো।

গরিব হওয়ার কারণে মেয়ের পরিবারের লোকজন প্রেমে বাধা হয়। বড়লোকের ছলের লগে বিয়ে হয় মেয়েটার। সেই থাকে গান আর সুর সঙ্গী।শফিকুল ইসলাম

স্মৃতি হাতড়ে শফিকুল বলেন, একবার ঢাকায় রিকশা চালাতে গিয়েছিলেন। দৈনিক বাংলার মোড়ে রিকশা থামিয়ে একমনে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি ২০ তলা ভবন থেকে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির চিৎকার শুনতে পান। ওপরে তাকাতেই ৫০ টাকার একটা নোট নিচে ফেলে দেন ওই ব্যক্তি। প্রশংসা করেন বাঁশির সুরের।

আলাপচারিতা একসময় আনমনে হয়ে পড়েন শফিকুল। বলেন, ‘মন তো (মনে) না পাওয়ার কষ্ট আচে। ১৬ বছর বয়সে এলাকার এক মেয়ের প্রেমে পড়চিনু। ৬ মাস ভালোই চলিচ্চিল সেই প্রেম। গরিব হওয়ার কারণে মেয়ের পরিবারের লোকজন প্রেমে বাধা হয়। বড়লোকের ছলের লগে বিয়ে হয় মেয়েটার। সেই থাকে গান আর সুর সঙ্গী। আরও পরে সঙ্গী হয় বাঁশি। এহন বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলে থাকপার চেষ্টা করি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের থ্রো লাগল আম্পায়ারের মাথায়, এরপর যা হলো
  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার