বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেছেন, আসন্ন রমজান মাসে ভেজাল খাদ্য পরীক্ষা ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে থাকবে বিএসটিআই। যদি কেউ অনিয়মের চেষ্টাও করে, তার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় তিনি ভোক্তাকেও খাবার ক্রয় ও খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার বিএসটিআই কুমিল্লা জেলা অফিসের ভবন উদ্বোধন ও অত্যাধুনিক ক্লে ব্রিকস তথা ইটের টেস্টিং ল্যাবরেটরি উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে তিনি। মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, ‘একবার ভাবুন, আপনি যে খাবার অন্য কারও ছেলেমেয়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন, তা আপনার সন্তান খেলে কী হবে? যদি আমাদের মানুষ হিসেবে অন্তত এই উপলব্ধিটুকু থাকে তাহলে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা সম্ভব।’ 
সিন্ডিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট আসলে একজনে হয় না। অনেক লোকের যৌথ অসাধু কাজ সিন্ডিকেট তৈরি করা। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করি। এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ মূলত প্রশাসনের কাজ। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের জন্য বিএসটিআইর যে কোনো সহযোগিতা লাগলে আমরা প্রস্তুত আছি।’
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (সিএম) সাইফুল ইসলাম, পরিচালক খোদেজা খাতুন, কুমিল্লা জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শাহ মো.

আলমগীর খান, বিএসটিআই কুমিল্লার উপপরিচালক (সিএম) কে এম হানিফ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে গত এক বছরের বিএসটিআইর কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়। জানা গেছে, কুমিল্লা অফিস থেকে এক বছরে ১৫৭টি সার্ভিল্যান্স অভিযান ও ১৫০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, বেকারি-কনফেকশনারি, মিষ্টির কারখানা, জুয়েলারি দোকান, পেট্রোল পাম্প, ইটভাটা, পাইকারি বাজারে অভিযান চালিয়ে ১৬০টি মামলা করা হয়। ৬৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ