রাষ্ট্র সংস্কার বেশি জরুরি, সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে: ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির
Published: 14th, February 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে রাষ্ট্র সংস্কার বেশি জরুরি। সংস্কার শেষ করে কালোটাকা ও পেশিশক্তিমুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়জুল করীম এ কথা বলেন। সম্মেলনে রাজনৈতিক শুদ্ধাচার ও বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে কার্যকরী নির্বাচনব্যবস্থা সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা হয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
ফয়জুল করীম বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের বিকল্প নেই। গতানুগতিক নির্বাচন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে আবার প্রতিষ্ঠা করার কোনো মানে হয় না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, যাঁদের নিয়ে এই কমিশন গঠন করা হয়েছে, তাঁরা সবাই এলিট (অভিজাত) শ্রেণির। শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের কোনো প্রতিনিধি সেখানে নেই, উলামায়ে কেরামের কোনো প্রতিনিধি নেই। এই কমিশনের মাধ্যমে গণঐক্য গঠন সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে তিনটি দলের শাসনে মানুষ দেখেছে শোষণ ও প্রবঞ্চনা। কাজেই এ দেশের ভবিষ্যৎ হলো একমাত্র ইসলাম। ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি ফিরে আসবে না।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল খলিলুর রহমান।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, নগর দক্ষিণ সেক্রেটারি আবদুল আউয়াল মজুমদার, শ্রমিকনেতা শাহাদাত হোসাইন প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়াকে সভাপতি, মুহাম্মদ ইমাম হোসেন ভুঁইয়াকে সহসভাপতি এবং শামসুল ইসলাম মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২৫-২৬ সময়ের জন্য নতুন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত