ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে রাষ্ট্র সংস্কার বেশি জরুরি। সংস্কার শেষ করে কালোটাকা ও পেশিশক্তিমুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়জুল করীম এ কথা বলেন। সম্মেলনে রাজনৈতিক শুদ্ধাচার ও বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে কার্যকরী নির্বাচনব্যবস্থা সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা হয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

ফয়জুল করীম বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের বিকল্প নেই। গতানুগতিক নির্বাচন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে আবার প্রতিষ্ঠা করার কোনো মানে হয় না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, যাঁদের নিয়ে এই কমিশন গঠন করা হয়েছে, তাঁরা সবাই এলিট (অভিজাত) শ্রেণির। শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের কোনো প্রতিনিধি সেখানে নেই, উলামায়ে কেরামের কোনো প্রতিনিধি নেই। এই কমিশনের মাধ্যমে গণঐক্য গঠন সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে তিনটি দলের শাসনে মানুষ দেখেছে শোষণ ও প্রবঞ্চনা। কাজেই এ দেশের ভবিষ্যৎ হলো একমাত্র ইসলাম। ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি ফিরে আসবে না।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল খলিলুর রহমান।

ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, নগর দক্ষিণ সেক্রেটারি আবদুল আউয়াল মজুমদার, শ্রমিকনেতা শাহাদাত হোসাইন প্রমুখ।

সম্মেলন শেষে মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়াকে সভাপতি, মুহাম্মদ ইমাম হোসেন ভুঁইয়াকে সহসভাপতি এবং শামসুল ইসলাম মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২৫-২৬ সময়ের জন্য নতুন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ