দেশে বেড়েছে পাকিস্তানি গায়কদের কদর। কয়েকদিন আগে ঢাকায় পাকিস্তানের রাহাত ফতেহ আলি খান, আতিফ আসলামসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় পাকিস্তানি গায়ক মাতিয়ে গেলেন।  এবার ঢাকায় গান গাইতে  আসছেন পাকিস্তানের আলী আজমত। সুফি রক ব্যান্ড ‘জুনুন’র জনপ্রিয় এই ভোকাল তিনি।  আগামী ২ মে ঢাকায় একক কনসার্ট করবেন এই গায়ক। 

‘আলি আজমত (দ্য ভয়েজ অব জুনুন) লাইভ ইন ঢাকা’ শিরোনামে আয়োজিত এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে। আয়োজন করেছে অ্যাসেন বাজ। যদিও এখনও টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। এ ছাড়া কনসার্টে আলি আজমতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো শিল্পী মঞ্চ ভাগ করবেন কি-না, সে বিষয়ও চূড়ান্ত হয়নি। তবে আয়োজকরা জানিয়েছেন, শিগগিরই এ সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। 

আলি আজমতের সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রোতাদের পরিচয় নতুন নয়। জুনুন ব্যান্ডের সঙ্গে তিনি এর আগেও দুইবার বাংলাদেশে পারফর্ম করেছেন। তবে এবারই প্রথমবারের মতো একক কনসার্ট নিয়ে আসছেন এই গায়ক।

১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত সুফি ঘরানার রক ব্যান্ড ‘জুনুন’র অন্যতম প্রধান সদস্য আলি আজমত। তাঁর কণ্ঠের জাদুতে ‘সায়োনি’ কিংবা ‘খুদি কো কর বুলন্দ’ গানগুলো পেয়েছে আলাদা মাত্রা। শুধু ব্যান্ডসংগীতেই নয়, বলিউডেও তিনি নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। ২০০৩ সালে ‘পাপ’ সিনেমার ‘গরজ বরস’ গানের মধ্য দিয়ে বলিউডে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ সিনেমার ‘জিন্দা’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন।

গান ছাড়াও অভিনয়ে দেখা গেছে তাঁকে। তাঁর অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা পাকিস্তানের ব্লকবাস্টার হিট ‘দ্য লিজেন্ড অব মওলা জাট’। সংগীতের প্রতি তাঁর নিবেদন ও বহুমাত্রিক প্রতিভাই তাঁকে আজও দক্ষিণ এশিয়ার সংগীতপ্রেমীদের মাঝে ভীষণ জনপ্রিয় করে রেখেছে।

২ মে’র কনসার্ট নিয়ে উন্মুখ সংগীতপ্রেমীরা। তাঁরা অপেক্ষায় আছেন, আলী আজমত তাঁর সুফি রক সংগীতের অনন্য আবহ নিয়ে কীভাবে ঢাকার মঞ্চ মাতিয়ে তুলবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কনস র ট কনস র ট জনপ র য়

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ