‘আমার সঙ্গে কেউ তর্ক করতে পারবে না’
Published: 19th, February 2025 GMT
ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি চাইলেও তা শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে নয় বলে জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় এ কথা জানিয়ে দিলেন তিনি। খবর এনডিটিভির।
ফক্স নিউজের শন হ্যানিটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিশ্ববাণিজ্য এবং আমেরিকার শুল্ক কাঠামো নিয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। এ সময় ইলন মাস্কও উপস্থিতি ছিলেন। তার সুপারিশের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ট্রাম্প সরকার ভারতের জন্য বরাদ্দ ১৮২ কোটি টাকা (২ কোটি ১০ লাখ ডলার) অনুদান ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে ভরতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। তার পর তাঁর এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেছি, তিনি এখানে ছিলেন, আমি বললাম, আমরা পারস্পরিক শুল্ক চালু করব। আপনারা যা নেবেন, আমরাও তাই নেব। তিনি (মোদি) বললেন, না, না– এটা আমি পছন্দ করি না। আমি বললাম, না, না– আপনারা যা নেবেন, আমরাও তাই নেব। আমি সব দেশের সঙ্গেই এটা করছি। সে সময় ট্রাম্পের পাশে বসে থাকা ইলন মাস্ক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এটা ১০০ শতাংশ, গাড়ি আমদানির ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়।
ট্রাম্প আরও বলেন, আমার সঙ্গে কেউ তর্ক করতে পারবে না। যদি আমি বলি ২৫ শতাংশ, তারা বলবে, ‘ওহ, এটা ভয়ংকর’। আমি আর এটা বলি না, কারণ আমি বলি, ‘তারা যা নেবে, আমরাও তাই নেব।’ আর তার পরেই তারা তখন থেমে যায়।
এদিকে মোদির সাম্প্রতিক ওয়াশিংটন সফরের পর উভয় দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দ্বিগুণ করে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২৫ সালের শরৎকালে একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি (বিটিএ) সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।