ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই, বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা। যেখানে জুলুম, দুর্নীতি, অন্যায় থাকবে না। থাকবে শান্তি, সমৃদ্ধি, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সাম্য। সেই রাষ্ট্র হবে ইসলামি মূল্যবোধের রাষ্ট্র। এ জন্য আমরা ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়াস নিয়েছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনে দেশ গড়ার কাজ করতে চাই। ইসলামের পক্ষে বৃহত্তর ঐক্যের জন্য এই প্রয়াস ইনশা আল্লাহ সফল হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরিফে তিন দিনের মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম, শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণে ‘ওলামা মাশায়েখ’ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এ কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আমরা ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করেছি। তারা সবাই একমত হয়েছে। আমরা এই আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছি। আশা করি, অচিরেই আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলো একটি বাক্স দিতে পারব।’

গতকাল বুধবার চরমোনাই দরবার শরিফে বার্ষিক মাহফিল শুরু হয়েছে। তিন দিনের এ মাহফিল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। মোনাজাত পরিচালনা করবেন চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করীম।

ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ। তিনি  বলেন, ‘এ দেশে যখনই কোনো বাতিল শক্তি মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তখনই এ দেশের ওলামায়ে কেরাম প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে। সেই গর্জনের ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনে সব বাতিল অপশক্তি রুখে দিতে হবে। ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনার জন্য সব ইসলামি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মানসিকতায় এগিয়ে আসতে  হবে।’  

সম্মেলনে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমাদের অন্তরের ঐক্য হলে বৃহত্তর ঐক্য সম্ভব। ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠায় এ দেশের ইসলামপন্থীদের টেকসই ঐক্যে আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত। তবু আমরা চাই, ইসলামি হুকুমত কায়েমে ইসলামপন্থী সব দলের ঐক্য হোক।’

সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে বলেন, ‘আজকের এই প্রেক্ষাপটে দেশের ওলামায়ে কেরামের হাতে বড় সুযোগ এসেছে। আমরা যদি এই সুযোগে ইসলামকে বিজয়ী করতে না পারি, তবে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। আজকে দেশের সর্বস্তরের মানুষের জাতীয় চাহিদা হলো ইসলামপন্থীদের ঐক্য। আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে সমস্ত বাতিল শক্তি পরাভূত হবে।’
সম্মেলনে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘যারা দ্রুত নির্বাচন চায়, তাদের সঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনীর যোগসাজশ রয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, আগে সংস্কার করতে হবে। তার পরে হবে জাতীয় নির্বাচন। এখন ইসলামি শক্তির বলয় বৃদ্ধি করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমির আব্দুল হক আজাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মুফতি মিজানুর রহমান, বুড্ডিস্ট ফেডারেশন বাংলাদেশের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া,  নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী, মিসরের আল–আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহমাদ সিদকী, ইন্দোনেশিয়ার ইসলামিক উম্মাহ ইউনিয়নের প্রতিনিধি আদেহ নুয়ানসা ইউবিসোনু, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ইসল ম ল কর ম আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে চুরির মামলার ২ আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩

বন্দরে বসতঘরে চুরির ঘটনার মামলার ২ চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলো বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা ছোট মসজিদ এলাকার কাজীমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির(২২) ও একই এলাকার ইয়াজল হোসেন মিয়ার ছেলে অলিদ(৪০)। এ ব্যাপারে গৃহিনী শান্তা বেগম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে  বন্দর থানায়  চুরির মামলা দায়ের করেন। যার নং ১(১১)২৫। 

এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত মামলায়  আদালত প্রেরণ করেছে পুলিশ।

গত রোববার (২ নভেম্বর)  রাতে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর বন্দর উপজেলা  ফরাজীকান্দা এলাকায় এ চুরির ঘটনাটি ঘটে।

‎মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে,  মামলার বাদিনী বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা গ্ ছোট মসজিদস্থ তার  পিতার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। বিবাদী একই এলাকার সম্পর্কে বাদিনী চাচাত ও ফুফাত ভাই ।

গত ৩ অক্টোবর বাদিনী নানা মৃত্যুবরন করলে বাদিনীসহ তার  পরিবারের লোকজন মুন্সিগঞ্জস্থ নানা বাড়িতে যায়। পরের দিন গত ৪ অক্টোবর বাদিনী তার পিতার বাড়িতে এসে  রুমে প্রবেশ করলে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পায়।

সন্দেহ হলে ঘরের ভিতর তল্লাশী করিলে দেখতে পাড আমাদের দুটি এড্রয়েট মোবাইল সেট,মাটির ব্যাংকে রক্ষিত ১০ হাজার টাকা,দামী ব্রান্ডের ব্লুটোথসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় ।

ঘরের বিভিন্ন স্থানে খোজ করিয়াও বর্নিত মালামালের কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। বিবাদীরা ইতিপূর্বেও আমার বাড়িতে চুরি করেছিল এবং আমাদের প্রতিবেশিরা আমাদের অনুপস্থিতিতে বাড়ির চারপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছে বলে জানায়।

‎‎পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।  এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে। পরে আটককৃতকে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ