সাতক্ষীরায় দুই মাসের কন্যাশিশুকে পুড়িয়ে হত্যার পর নিজের বৃদ্ধা মাকেও পিটিয়ে হত্যা করেছে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার ব্রক্ষরাজপুর ইউনিয়নের নুনগোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আঁখি আক্তার শান্তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

নিহত শিশু আশরাফী খাতুন (২ মাস) সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের আজহারুল ইসলাম ও আঁখি আক্তার শান্তা (৩২) দম্পতির কন্যা এবং হোসনে আরা বেগম (৬৫) একই উপজেলার নুনগোলা গ্রামের মৃত খোদাবক্স মেম্বরের স্ত্রী ও শান্তার মা।

আরো পড়ুন:

দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মৃত্যু, গ্রেপ্তার ৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ী হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক বছর আগে কুশখালী গ্রামের আজহারুল ইসলামের সঙ্গে শান্তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শান্তা তার স্বামীর বাড়ি অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি তিনি মাঝে মাঝে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। আর এ কারণে স্বামী আজহারুল বুধবার তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। বৃহস্পতিবার স্ত্রী ও সন্তানকে রেখে তিনি বাড়িতে যান। এরই মধ্যে দুপুর আড়াইটার দিকে শান্তা তার মেয়ে আশরাফীকে জ্বলন্ত চুলার মধ্যে ফেলে দেয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে শান্তার মা হোসনে আরা বেগম শিশুটিকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসেন। এ সময় শান্তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সজোরে তার মায়ের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলে মারা যায় হোসনে আরা। এরই মধ্যে চুলার আগুনে পুড়ে মারা যায় শিশু আশরাফী। পরিস্থিতি ভয়াবহতা বিবেচনা করে স্থানীয়রা শান্তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।  

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রক্ষরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন জানান, তিনি এলাকায় না থাকায় বিষয়টি জেনে সেখানে এক ইউপি সদস্যকে পাঠিয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীমুল হক বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শান্তাকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। 

তিনি আরো জানান, মরদেহ দুটি উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ