চোট কাটিয়ে দীর্ঘ ১৪ মাস পর ফিরেছেন ক্রিকেটে। প্রত্যাবর্তনটাও হয়েছি দারুণ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে মোহাম্মদ শামি নিয়েছেন ৫ উইকেট। ফেরার গল্পটা যে সহজ ছিল না, তা তো জানা কথাই।

অস্ত্রোপচারের পরের দিনগুলোতে নাকি শামির মনে হতো, নতুন করে হাঁটা শিখছেন।
এ সময়ে যে আরও অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁকে দেখে ভারতেরই সাবেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নবজ্যোত সিং সিধুরই মনে হয়েছে, ৫–৬ কেজি ওজন কমিয়েছেন। ওই কথার জবাবে স্টার স্পোর্টসে ম্যাচের পর তিনি বলেছেন, ‘আমি ৯ কেজি ওজন কমিয়েছি। সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার হচ্ছে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করা। আমি যখন এনসিএতে ছিলাম, ৯০ কেজির কাছাকাছি ওজন ছিল। আমি অস্বাস্থ্যকর খাবার খাইনি। মিষ্টি থেকেও দূরে থেকেছি।’


এ তো গেল চোটের সময়কার কথা—একজন ক্রিকেটারকে ফিট থাকতে যে কত কিছু করতে হয়, তার উদাহরণই হয়তো শামি। এর আগে ঘরোয়া লিগে শামির দল বাংলার বোলিং কোচ শিব সুন্দর দাস জানিয়েছিলেন, ফিট থাকতে শামি নাকি তাঁর প্রিয় বিরিয়ানি বিসর্জন দিয়েছিলেন। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে হেসে শামি উত্তরে বলেন, ‘যদি বিরিয়ানির কথা বলেন, মাঝেমধ্যে খাওয়া তো যায়ই এ রকম কিছু! (হাসি)।’

আরও পড়ুন‘পাকিস্তান যদি ভারতকে হারায়, সেটা হবে অঘটন’১৭ ঘণ্টা আগে


এরপরই ক্রিকেটের জন্য কত ত্যাগ করতে হয়, তার একটা বড় উদাহরণ সামনে আনেন ভারতীয় এই পেসার, ‘২০১৫ সালের পর থেকে আমি শুধু একবেলা খাই। সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবার খাই না এতগুলো বছর ধরে। শুধু রাতে খাই। এই কাজ করা কঠিন, কিন্তু আপনি যখন একবার অভ্যস্ত হয়ে যাবেন, তখন সহজ হয়ে যায়।’

বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ