সংস্কার ও ফ্যাসিস্টের বিচার ছাড়া নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: জামায়াতের নায়েবে আমির
Published: 28th, February 2025 GMT
সংস্কার ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের বিচার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিগত তিনটি নির্বাচন প্রমাণ করেছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে না। জালেম পালিয়েছে, জুলুম এখনো পালায় নাই। দেশের মানুষের ওপর যারা জুলুম করেছে, তাদের আগে বিচার হতে হবে। বিচারের আগে নির্বাচন হবে না। সংস্কার ও বিচারের পরেই নির্বাচন হবে, তার আগে কোনো নির্বাচন হবে না। সংস্কার ও ফ্যাসিস্টের বিচার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’
জামায়াতের সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ছাত্র-জনতার হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আমরা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। দেশের ১৮ কোটি মানুষ আজ শান্তিতে নিশ্বাস নিতে পারছে। চব্বিশের স্বাধীনতায় যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই আরেক দল নির্বাচন চাচ্ছে। মনে রাখবেন নির্বাচনের জন্য নয়, রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল। রাষ্ট্রে শান্তি ফেরাতে আল্লাহর আইন বাংলার মাটিতে বাস্তবায়ন করা হবে, ইনশা আল্লাহ। মনে রাখতে হবে জালিম পালিয়েছে, কিন্তু তাদের দোসররা আজও সংশোধন হয়নি। তাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্পষ্ট বক্তব্য, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন হবে।’
স্বাধীনতাযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করার কথা উল্লেখ করে মুজিবুর রহমান আরও বলেন, নিজেদের অপকর্মের কারণে জনরোষে পড়ে ফ্যাসিস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, যারা আল্লাহর আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে না, তারা কাফের, ফাসেক ও জালেম। তাই আগামীতে ইসলামপন্থীদের পক্ষে থাকতে হবে। স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। শুধু তা–ই নয়, চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল তারা।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মতিন, বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মোবারক হোসেন, উত্তর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আলমগীর সরকার, সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আনিসুর রহমান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন আল ল হ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।
আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’
আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’
এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।