ক্যাশলেস লেনদেনের জনপ্রিয়তা যত বাড়ছে, কার্ডের ওপর নির্ভরতাও তত বাড়ছে। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন না, এমন মানুষের সংখ্যাও দিন দিন কমে আসছে। প্রতিটি ডেবিট কার্ডের নির্দিষ্ট মেয়াদ রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ কার্ড দিয়ে কোনো লেনদেন সম্ভব হয় না। তাই অনেকেই কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে কী করবেন, এ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় থাকেন। কার্ড ঠিকঠাক কাজ না করলে পোহাতে হয় নানা ঝক্কিঝামেলা। তাই এটি যত দ্রুত সম্ভব নবায়ন করা জরুরি। বেশির ভাগ ব্যাংকই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন কার্ড ইস্যু করে এবং গ্রাহকের নিবন্ধিত ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়। তবে অনেকেই সময়মতো নতুন কার্ড পান না, ফলে বিপাকে পড়তে হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে করণীয় কী? আসুন, জানা যাক।
যেভাবে পাবেন নতুন ডেবিট কার্ড—ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করুন
নতুন ডেবিট কার্ড পেতে প্রথমেই নির্দিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আপনি যে ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করছেন বা করতে চান, সে ব্যাংকের নিকটস্থ শাখায় গিয়ে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। নতুন কার্ড পেতে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হয় এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের কপি, ঠিকানার প্রমাণপত্রসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিতে হয়। কিছু ব্যাংকে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একটি নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হতে পারে, তবে এটি ব্যাংকভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্যাংকের শাখায় সরাসরি যোগাযোগ করলে কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারেন এবং নতুন কার্ড পাওয়ার সময়সীমা সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।
যোগাযোগ করতে পারেন অনলাইনে
অনেক ব্যাংকই অনলাইন ব্যাংকিং বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করার সুবিধা দেয়। এটি সবচেয়ে সহজ এবং সময় বাঁচানোর অন্যতম একটি উপায়। ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে লগইন করে ডেবিট কার্ড বিভাগের মাধ্যমে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়। অনলাইন আবেদন করলে সাধারণত ব্যাংক সরাসরি গ্রাহকের নিবন্ধিত ঠিকানায় নতুন কার্ড পাঠিয়ে দেয়।
কাস্টমার কেয়ারে কল দিতে পারেনযদি ব্যাংকে সরাসরি যাওয়ার সুযোগ না থাকে বা অনলাইন প্রক্রিয়ায় কোনো জটিলতা হয়, তাহলে ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার নম্বরে কল করেও নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করা সম্ভব। বেশির ভাগ ব্যাংকেরই কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস থাকে, যেখানে ফোন করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নতুন কার্ডের আবেদন করা যেতে পারে। ব্যাংকের প্রতিনিধি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন এবং কার্ড ইস্যুর সময়সীমা সম্পর্কে জানাবেন। কিছু ব্যাংক ফোনকলের মাধ্যমেই নতুন কার্ড ইস্যুর আবেদন গ্রহণ করে এবং কার্ড গ্রাহকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়।
কীভাবে নতুন কার্ড সক্রিয় করবেন?নতুন কার্ড পাওয়ার পর এটি সক্রিয় বা অ্যাকটিভেট করা জরুরি। কারণ, সক্রিয় না হলে সেটি দিয়ে কোনো লেনদেন করা সম্ভব নয়। সাধারণত এটিএম মেশিন, অনলাইন ব্যাংকিং কিংবা কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে নতুন কার্ড সক্রিয় করা যায়। এটিএমে গিয়ে কার্ড প্রবেশ করিয়ে নতুন পিন সেট করলেই এটি সক্রিয় হয়ে যায়। অনেক ব্যাংক অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমেও নতুন কার্ড সক্রিয় করার সুবিধা দেয়। কার্ড সক্রিয় করার আগে ব্যাংকের নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ে নেওয়া উচিত, যাতে লেনদেনে কোনো সমস্যা না হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য গ য গ কর ল নদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।