যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিনের গাজায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় রাজি নয় ইসরায়েল। দেশটি প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে এবং জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে আগ্রহী। তবে ইসরায়েলের এই অবস্থান প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

গত ১৯ জানুয়ারি ফিলিস্তিনের গাজায় প্রথম ধাপে ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে ২৫ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি আটজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।

প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল শনিবার। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির ১৬তম দিন থেকে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে আলোচনার জন্য প্রতিনিধিদল পাঠাতে বিলম্ব করে ইসরায়েল। শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল বৃহস্পতিবার মিসরের কায়রোয় নিজেদের প্রতিনিধিদল পাঠায়।

শুক্রবার মিসরের দুটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আলোচনার জন্য কায়রো এসেছে ইসরায়েলের প্রতিনিধিদল।

তবে সূত্র দুটি জানায়, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিরোধিতা করছে হামাস। তারা যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের মূল চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছে।

দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হলে গাজা ও মিসর সীমান্তবর্তী ‘ফিলাডেলফি করিডর’সহ গাজা থেকে ইসরায়েলের পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা। গত বছরের মে মাসে এই করিডরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল ইসরায়েল। দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ‘কান’-কে জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, ফিলাডেলফি করিডর ছাড়বেন না ইসরায়েলি সেনারা।

জাতিসংঘের মহাসচিবের আহ্বান

আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল–হামাস চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা ঘিরে সামনের দিনগুলো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি অবশ্যই বহাল থাকতে হবে।

ইসরায়েলকে আরও ৩০০ কোটি ডলারের অস্ত্র

এএফপি জানায়, ইসরায়েলের কাছে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। গত শুক্রবার এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ক্রিকেটার এবং মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। 

সোমবার (১৬ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন—সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম এবং বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) উদ্দীপনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদার, সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও সিইও বিদ্যুত কুমার বসু, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাকিয়া কে হাসান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ড. মো. গোলাম আহাদ, সাবেক সদস্য মো.মাহবুবুর রহমান, সাবেক সদস্য মো. নজরুল ইসলাম খান, নাহিদ সুলতান, ভবতোষ নাথ, ডা. আবু জামিল ফয়সাল ও শওকত হোসেন।

তাদের মধ্যে শেষের ১০ জনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান এই ১০ জনের  দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তরা দায়িত্ব পালনকালে পরস্পর যোগসাজশে ব্যক্তিগত লাভ ও আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মাইক্রোক্রেডিট আইন (২০০৬) এর ২৪(৩) ধারা ও বিধি (২০১০) এর বিধি ১৯ (১)  লঙ্ঘন করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র ঋণ তহবিল থেকে অনুমোদনহীন গোল্ডব্রিকস এবং এ অ্যান্ড পি ব্যাটারি প্রকল্পে যথাক্রমে প্রায় ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭৭ টাকা ও ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৪৬৬  টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে স্থানান্তর করেছেন। এ জালিয়াতি সম্পর্কিত একটি মামলা দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন আছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আসামিররা দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন ঠেকানো ও এনআইডি ব্লক করা প্রয়োজন।

সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন।

আবেদনে বলা হয়, সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়েরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে সরকারি বিধি ও শেয়ারবাজার আইন লঙ্ঘন করে শত শত কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে জানা গেছে, অভিযোগ-সংশ্লিষ্টরা অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত আবশ্যক। 

ঢাকা/এম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ