Samakal:
2025-08-01@21:55:10 GMT

পাঁচ বছরে অনলাইন থেকে শোরুম

Published: 1st, March 2025 GMT

পাঁচ বছরে অনলাইন থেকে শোরুম

প্রত্যেক নারীর সফলতার পেছনে থাকেন তিনি নিজেই। কারণ তাঁর ইচ্ছাশক্তি এবং মনোবল তাঁকে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর। নিজের ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। করপোরেট জগৎসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে নারীর সংখ্যা বাড়ছে; সেই সঙ্গে নারীরা এখন পড়াশোনা করছেন, চাকরি করছেন; স্বাধীন উদ্যোক্তাও হচ্ছেন। তেমনই একজন ইয়াসমিন সুলতানা। 
দেশের ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লার বিখ্যাত মোমবাটিক পোশাক নিয়ে ২০১৯ সালে অনলাইনে কাজ শুরু করেন ইয়াসমিন। চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ইয়াসমিন সুলতানার বিয়ে হয়ে যায় অল্প বয়সে। স্বামীর চাকরিসূত্রে ঢাকার সাভারে তাঁর বসবাস।
শূন্য থেকে শুরু করে নিজের চেষ্টা, অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে কীভাবে নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করা যায়, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অদম্য সংগ্রামী নারী ইয়াসমিন। আজ তিনি সফল নারী উদ্যোক্তা। এই পথটা সহজ ছিল না। অনেক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। ইয়াসমিনের শৈশব ও কৈশোরের স্বর্ণালি দিনগুলো কাটে চাঁদপুরেই। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ালেখা করেন সেখান থেকে। তখনও সবেমাত্র পড়ছিলেন উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষে। পারিবারিকভাবে হঠাৎ করে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়। শ্বশুরবাড়িতে শুরু হয় নতুন জীবন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সহযোগিতায় পাস করেন এইচএসসি। এর পরই তাঁর প্রথম সন্তানের জন্ম। এক বছর বিরতি দিয়ে অনার্সে ভর্তি হয়ে আরও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। পড়ালেখা করে চাকরি পাওয়া যেমন সহজ নয়; তেমনি স্বামী-সংসার সামলে চাকরি করতে পারাটাও ভীষণ কঠিন। এমনটা ভেবেই অন্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চিন্তা মাথায় আসে তাঁর। স্বামীর দেওয়া হাত খরচের সামান্য কিছু টাকা জমিয়ে শুরু করেন দেশীয় পণ্যের অনলাইন ব্যবসা।
শুরুতেই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লার বিখ্যাত মোমবাটিকের বাহারি ডিজাইনের মেয়েদের থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, ওড়না, হাতের কাজ করা শাড়ি, ব্লাউজ, বেডশিট তার ফেসবুক পেজ সঞ্চয়িতা থেকে লাইভে এসে প্রদর্শনী শুরু করেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতাকে তিনি দেশীয় পণ্যের ব্যাপারে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। ক্রেতারা তার লাইভ দেখে নিজের পছন্দমতো পোশাক অর্ডার করতে শুরু করেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মেলায় অংশগ্রহণ করে কুড়িয়েছেন অনেক সম্মাননা। পেয়েছেন আর্থিক সহযোগিতাও। অর্থনীতিতে অবদান রাখায় নিজ জেলা চাঁদপুর থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘চাঁদপুর প্রভাত সমাজকল্যাণ সংস্থা’ থেকে পেয়েছেন সম্মাননা। সম্প্রতি আশুলিয়া এলাকার মির্জানগর এনায়েতপুরে নিজ প্রতিষ্ঠানের একটি আউটলেট উদ্বোধন করেছেন। 
উদ্যোক্তা হতে হলে কাজের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ অত্যাবশকীয় বলে মনে করেন ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুটা সহজ ছিল না। তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়াতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবু স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিইনি। এ কাজে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন আমার স্বামী।’ পরিবার-সংসার সামলে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াটা কঠিন। সঠিক পরিকল্পনা, অধ্যবসায় ও পরিশ্রম থাকলে এটি সম্ভব বলে মনে করেন ইয়াসমিন। তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন আমার স্বপ্ন ছিল, কবে একটি শোরুম হবে। আমার ক্রেতারা অনলাইনে পণ্য কেনার পাশাপাশি এখন সরাসরি শোরুমে এসেও দেখে বুঝে তাদের পছন্দসই পণ্য কিনতে পারবেন।’ v
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ