পবিত্র রমজানকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে কাজে লাগাতে চাচ্ছে বিএনপি। দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ায় দলটির নেতাকর্মীরা উন্মুক্ত পরিবেশে ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে সারাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সারার পরিকল্পনা করছে। এরই মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজ এলাকায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নেতাকর্মী ছাড়াও তারা সাধারণ মানুষের দোয়া নিচ্ছেন। সবার জন্য ইফতার আয়োজনের প্রস্তুতি সারছেন।

বিএনপির কয়েক নেতা জানান, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলের লক্ষ্য নেতাকর্মীকে সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ রাখা। ইফতারের মাধ্যমে এ কাজটি করা সহজ। এবারও গুম-খুনের শিকার নেতাকর্মীর পরিবারকে রোজার প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ঈদ উপহার পাঠানো হবে। এ তালিকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদেরও রেখেছেন বিএনপির হাইকমান্ড।

কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি কয়েকটি ইফতার মাহফিল আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে। তবে গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিনটির তারিখসহ চারটি ইফতারের সূচি চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে আজ রোববার প্রথম রোজায় এতিম ও আলেমদের সম্মানে, ৬ মার্চ কূটনীতিক এবং ৯ মার্চ রাজনীতিবিদদের ইফতার করাবে বিএনপি। আরেকটির দিন চূড়ান্ত হয়নি।

বিএনপির সূত্র জানায়, রাজনীতিবিদদের সম্মানে আয়োজিত ইফতারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি শেখ হাসিনার পতনের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিকেও (এনসিপি) আমন্ত্রণ জানাবে বিএনপি। একটা সময় ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু কারাবন্দি থাকায় তিনি বিগত ছয় বছর তা পারেননি।

গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মুক্তি পেয়েছেন খালেদা জিয়া। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডনে ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আছেন। সেখানেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন বলে জানা গেছে।

বারবার দাবি জানালেও অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করেনি। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড.

ইউনূসকে আগামী এক মাসের মধ্যে নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে রূপরেখা না দিলে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

বিএনপি নেতারা জানান, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা হলে আবারও তাদের রাজপথের কর্মসূচিতে যেতে হবে। এরই অংশ হিসেবে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে সক্রিয় রাখতে পুরো রমজান তৎপর থাকবে। সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবেন নেতারা। গত বছর ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এর পর সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি তৃণমূলে সহস্রাধিক ইফতার মাহফিল আয়োজন করে। কিন্তু বেশির ভাগ কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীনরা হামলা ও বাধা দিয়েছিল।

এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এবার নির্বিঘ্নে রোজা ও ঈদ উদযাপন করতে পারবেন তারা। বাড়তি হিসেবে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায় অবস্থান নিয়ে গণসংযোগ করবেন। ইফতার ও ঈদের  মধ্য দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নেতাদের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সমকালকে বলেন, ‘রোজায় মানুষ ধর্মকর্ম নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। বিগত দিনে বিএনপি নেতাকর্মীকে ইফতার আয়োজনে ফ্যাসিস্টরা অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যেখানে আমরা ইফতার আয়োজন করতাম, সেখানেই বাধা দেওয়া হতো। শেখ হাসিনার পতনের পর পরিস্থিতি ভিন্ন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এবার ইফতার আয়োজন করা হবে। নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও এ কর্মসূচিতে যুক্ত করা হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম র ন ত কর ম ক ব এনপ র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি