দলের রান দুইশ’ হতেই ৬ উইকেট হারাল অস্ট্রেলিয়া
Published: 4th, March 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে শুরুতে উইকেট হারানোর পর ট্রাভিস হেড ছোট্ট ঝড় দেখান। এরপর দলের রান একশ’ হতেই ভাঙে স্টিভ স্মিথ-মার্নাস লাবুশানের জুটি। পরে দলকে টানতে থাকা স্মিথ দলের ২০০ রানের আগে ফেরেন। পরেই আউট হয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
অস্ট্রেলিয়া ৩৮ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রানে ব্যাট করছে। ক্রিজে থাকা অ্যালেক্স কেরি ৩৯ রান করেছেন। তার সঙ্গী বেন ডারসুইচ।
এর আগে দলের ৪ রানে ব্যক্তিগত শূন্য করে ফিরে যান অজি ওপেনার কুপার কনলি। ট্রাভিস হেড ৩৩ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন। দলের রান তখন ৫৮। তার ব্যাট থেকে পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা আসে। চারে নামা মার্নাস লাবুশানে দলের ১১০ রানে ৩৬ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন।
পরে আউট হন জস ইংলিশ। তার ব্যাট থেকে মাত্র ১১ রান পায় অজিরা। দলের রান ১৯৮ হলে বোল্ড হন স্মিথ। তিনি ৯৬ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেছেন। চারটি ও একটি ছক্কা মেরেছেন। ম্যাক্সওয়েল এক ছক্কা মারার পরেই অক্ষরের বলে বোল্ড হন।
ফাইনালে যাওয়ার এই লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ওপেনার ম্যাথু শটের ইনজুরিতে কনলিকে একাদশে রেখেছে। লেগ স্পিনার তানভীর সাংহা আছেন একাদশে। ভারত ৪ স্পিনার নিয়ে খেলছে।
ভারতের একাদশ: রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, অক্ষর প্যাটেল, কেএল রাহুল, হার্ডিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, বরুণ চক্রবর্তী, কুলদীপ যাদব।
অস্ট্রেলিয়ার একাদশ: ট্রাভিস হেড, কুপার কনলি, স্টিভ স্মিথ, মার্নাস লাবুশানে, জস ইংলিশ, অ্যালেক্স কেরি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, বেন ডারসুইচ, নাথান এলিস, অ্যাডাম জাম্পা, তানভির সাংহা।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দল র র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।