‘প্রতিযোগিতা জ্ঞানার্জনের আগ্রহ বাড়ায়। শৃঙ্খলা ও বন্ধুত্ব সৃষ্টিতে সহায়তা করে।’পটুয়াখালী সমকাল সুহৃদ সমাবেশের প্রতিভা অন্বেষণের কুইজ প্রতিযোগিতায় বক্তারা এ কথা বলেন। পটুয়াখালী জেলা কমিটির নিয়মিত এ আয়েজন সম্প্রতি স্থানীয় লতিফ মিউনিসিপ্যাল সেমিনারিতে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতা সঞ্চালনায় ছিলেন সমকালের জেলা প্রতিনিধি ও জেলা সুহৃদ সমন্বয়ক মুফতী সালাহউদ্দিন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন– জেলা সুহৃদ সমাবেশের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কবি ও লেখক গাজী হানিফ, সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক পলাশ চন্দ্র হাওলাদার, সদস্য সচিব সাইয়ারা আফিয়া ঝুমুর, নির্বাহী সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম রাহাত, সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মো.

নাজমুল খান, সিনিয়র সহসভাপতি ফারহানা ইয়াসমিন ছন্দা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সরকারি মহিলা কলেজ শাখার সিনিয়র সহসভাপতি রাবিনা আক্তার আমরিন, সরকারি কলেজ শাখার প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক মো. রাহাতুল্লাহ, কার্যনির্বাহী সদস্য আল-কাইয়ুম, মো. রাকিবুল ইসলাম ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সুহৃদ মোহাম্মদ রাব্বি প্রমুখ। 

গত ২১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন জেলা সুহৃদ সমাবেশের আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম রাহাত, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সুহৃদ মো. রাকিবুল ইসলাম এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন সরকারি কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান।

অন্যদিকে ২৮ ফেব্রুয়ারি কুইজ প্রতিযোগিতায় জেলা সুহৃদ সমাবেশের আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম রাহাত, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন সরকারি কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সুহৃদ মোহাম্মদ রাব্বি। পরে বিজয়ী সুহৃদদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সুহৃদ নেতারা। এর আগে সুহৃদদের সাংগঠনিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, ঈদের পর প্রতিভা অন্বেষণে বিতর্কভিত্তিক উপস্থিত বক্তৃতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের।  

প্রতিযোগিতার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে সমকালের জেলা প্রতিনিধি ও সুহৃদ সমাবেশের জেলা সমন্বয়ক মুফতী সালাহউদ্দিন বলেন, ‘মানুষের প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্র না পেলে প্রতিভা ও শক্তি ক্রমেই ম্নান হয়ে যায়। তাই সমকাল সুহৃদ সমাবেশ মূলত প্রতিভার বিকাশ এবং জ্ঞান অর্জনের একটি বীমা প্রতিষ্ঠান। এই জ্ঞানের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সত্য, সুন্দর ও তারুণ্যনির্ভর আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’ 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কল জ শ খ র ল ইসল ম সদস য ক অন ষ ঠ সমক ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাতের কর্মকাণ্ড নিয়ে বোধকরি একটা মহাকাব্য লিখে ফেলা সম্ভব। তাঁরা যেভাবে গভীর কিংবা শেষ রাতে নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, ফেসবুকে বার্তা দিচ্ছেন; তাতে তো মনে হচ্ছে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা দিনে কাজ না করে রাতেই মনে হয় বেশি কাজ করেন! কয়েকটা উদাহরণ বরং দেওয়া যাক।

মাস কয়েক আগে যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ভাবে খারাপ হয়ে গেল, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাত তিনটার সময় সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন! বাংলাদেশের ইতিহাসে রাত তিনটার সময় আর কোনো মন্ত্রী এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করেছেন কি না, আমার অন্তত জানা নেই। আমরা সবাই ভাবলাম, তিনি হয়তো বড় কোনো ঘোষণা দেবেন। এরপর কী দেখলাম?

তিনি খুব সাধারণভাবে বললেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার নিজেদের উদ্যোগকে কঠিন ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে।

সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ আকাশ থেকে একটি  যুদ্ধবিমান ঢাকা শহরের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল বিল্ডিংয়ে ভেঙে পড়ল। আগুনে দগ্ধ শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নিজেরা উঠে এসে হাঁটছে; এমন দৃশ্যও আমাদের দেখতে হয়েছে। যে দৃশ্য দেখলে যে কেউ হয়তো ট্রমায় চলে যাবে। ওই স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হয়তো সরাসরি সেই দৃশ্য দেখেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে—এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সময়ের দাবি ছিল। এ সিদ্ধান্ত সরকার দিনের বেলাতেই নিতে পারত। অথচ আমরা কী দেখলাম?

সরকারের পক্ষ থেকে  রাত তিনটার দিকে ফেসবুকে এসে ঘোষণা করা হলো, পরের দিনের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে।

যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।

দিন দু-এক আগে এ সরকারকেই যাঁরা চাকরি দিয়েছেন, এ কথা বলছি কারণ, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, ‘ছাত্ররা আমার নিয়োগকর্তা’—সেই ছাত্রদের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গভীর রাতে ফেসবুক এসে লাইভ করেন প্রায় আড়াই ঘণ্টা।

এই আড়াই ঘণ্টার লাইভে মূল যে বক্তব্য তিনি তুলে ধরেছেন,  সারমর্ম করলে দাঁড়ায়: বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম মানি মেকিং মেশিনে পরিণত হয়েছে এবং অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। তিনি এটাও বলেছেন, এই সংগঠনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোড থেকে আসে। অর্থাৎ উপদেষ্টারা যেখানে থাকেন।

এদিকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটা ফেসবুক পোস্ট করেছেন। যদিও ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তিনি বেশ কয়েকবার এডিট করেছেন। তবে প্রথমে যা লিখেছেন, সেটা হচ্ছে, নতুন একটি দলের মহারথীদের কয়েকজন দুর্নীতিতে জড়িত। এ ছাড়া তিনি এটাও বলেছেন, একটা সার্কেলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তাঁদের কেন প্রশ্রয় দেওয়া হলো? আপনারা যদি জানেনই কিছু মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাহলে সরকারের অংশ হিসেবে আপনাদের তো দায়িত্ব তাঁদের আইনের আওতায় আনা। সেটা না করে ফেসবুকে পোস্ট করতে হচ্ছে কেন? তা–ও আবার রাত তিনটায়!

এই সরকার কি মাঝরাতের ফেসবুকীয় সরকারে পরিণত হয়েছে? পরীক্ষা পেছানোর মতো সিদ্ধান্ত যখন মাঝরাতে নিতে হয়, সংবাদ সম্মেলন যখন রাত তিনটায় করতে হয়, তখন তো প্রশ্ন জাগতেই পারে। কারণ এটা তো স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।

যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।
রাষ্ট্র যদি ভালো না থাকে তবে তার মাত্রা কতটুকু, সেটা নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

আমিনুল ইসলাম প্রভাষক, এস্তোনিয়ান এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ইউনিভার্সিটি
[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ