ছটফট করে একে একে ৯ গরুর মৃত্যু, বিষপ্রয়োগের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
Published: 7th, March 2025 GMT
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক দিনে একটি গবাদিপশুর খামারের দেশীয় জাতের ৯টি ষাঁড় গরুর মৃত্যু হয়েছে। খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে গরুগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খামারের মালিক। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রমজান মিয়া ও মনির মিয়া নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পশ্চিম রামনগর এলাকায় সুলেমান মিয়ার খামারে এ ঘটনা ঘটে। খামারের মালিক সুলেমান মিয়া বলেন, ‘কোরবানির ঈদ সামনে রেখে আমি আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ষাঁড় গরুগুলো লালন–পালন করছিলাম। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে হঠাৎ খামারের গরুগুলো একে একে অসুস্থ হতে থাকে। প্রথমে সকালে দুটি গরু মারা যায়। এরপর সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মোট ৯টি গরু ছটফট করতে করতে মারা গেছে। এতে আমার প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অবলা জীবদের এভাবে বিষ দিয়ে মেরে কী লাভ হলো? গরুর সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা। এখন আমি কীভাবে এত লোকসান পুষিয়ে পরিবারের খরচ বহন করব, তা নিয়ে বড় টেনশনে আছি।’
এ ঘটনায় সুলেমান মিয়া শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি সরকার ও প্রশাসনের কাছ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছেন এবং আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন।
খামারমালিক সুলেমানের বাবা মাসুক মিয়া বলেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে এলাকার সবজি ব্যবসায়ী রমজান মিয়ার বিরোধ চলছিল। ৪ মার্চ রমজান মিয়া তাঁদের বাড়িতে এসে প্রকাশ্যে জানমালের ক্ষতি করার হুমকি দেন। তাঁদের খামারে ছোট-বড় মিলিয়ে ২২টি গরু ছিল।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে দুটি গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার সদর ইউনিয়নের চানমনিপাড়া ও মোঘলটুলা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এ সময় বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশাররফ হোসাইন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে মুঠোফোনের চার্জার কেনাবেচা নিয়ে চানমনিপাড়া ও মোঘলটুলা গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় চানমনিপাড়া গ্রামের প্রয়াত হেলাল মিয়ার স্ত্রী হালিমা বেগম (৪২) ও তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) গ্রামের অদূরে একটি চালকলে চাল ভাঙাতে যান। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মোঘলটুলা গ্রামের তৌহিদ মিয়া (২০) হালিমা বেগমকে কটূক্তি করেন। এর প্রতিবাদ করেন তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম। এ নিয়ে সাইফুল ও তৌহিদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এর জের ধরে গতকাল রাত আটটার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে দুই গ্রামের মাঝখানের সড়কে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় অন্ধকারে অনেকের হাতে ছিল টর্চলাইট।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউএনও এবং রাত ১০টার দিকে ওসি ইটের আঘাতে আহত হন। ইউএনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি ডান হাঁটুর নিচে আঘাত পেয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ওসি রফিকুল হাসান। তাঁর ডান চোখের ওপরে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) তপন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান ঘটনাস্থলে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে।
ইউএনও মোশাররফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সরাইলে সংঘর্ষে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনা আমি মেনে নিতে পারিনি। সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। কথায় কথায় সংঘর্ষের সংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।’