Samakal:
2025-11-03@12:21:04 GMT

ময়লা-আবর্জনায় পুকুর এখন ভাগাড়

Published: 7th, March 2025 GMT

ময়লা-আবর্জনায় পুকুর এখন ভাগাড়

কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারের কাঁচাবাজারসংলগ্ন পুকুরটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পুকুরটিতে। এতে ভরাট হয়ে পুকুরটির অস্তিত্ব বিলীনের পথে। জনগুরুত্বপূর্ণ পুকুরটি খনন ও সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 
জানা গেছে, রবিরবাবাজার এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে দুই হাজারের বেশি দোকানপাট রয়েছে। বাজারের মাঝখানে ২৬ শতাংশ জায়গাজুড়ে পুকুরটির অবস্থান। আগে নানা কাজে স্থানীয়রা পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিনের সুবিধা না থাকায় ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা পুকুরে ফেলতে শুরু করেন। তদারকি না থাকায় বর্তমানে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে পুকুরটি। ময়লা-আবর্জনা থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ও দূষণ ছড়াচ্ছে। 
সরেজমিন দেখা গেছে, পুকুরের পাকা ঘাট পর্যন্ত দখল করে দোকান বসানো হয়েছে। পুকুরের চারপাশের পাড় দোকানপাট দিয়ে ঘেরা। ময়লা-আবর্জনায় পুকুরটিকে একটি বিশাল ভাগাড় বলে মনে হয়। পুকুরটি ভরাট হয়ে বিপুল আগাছা জন্ম নিয়েছে সেখানে। 
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনু মিয়া, আনোয়ার আলী, ইনাম উদ্দিন, ইউসুফ আলী জানান, আগে বাজারের ব্যবসায়ীরা পুকুরে অজু, গোসল ছাড়াও সবজি পরিষ্কার করতেন। বর্তমানে এই পুকুরে কোনো পানিই নেই। আছে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় লোকজন ময়লা-আবর্জনা ফেলে পুকুরটিকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছেন।
রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুক আহমদ বলেন, এটি সরকারি বাজারের পুকুর। বাজারে কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটলে যে পুকুরটি থেকে পানি পাওয়া যেত সেটি এখন ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। পুকুরটি পরিষ্কার করে পুরোনো পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের কাছে কয়েকবার আবেদন জানানো হয়েছে। পুকুরটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
পৃথিমপাশা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব আহমদ বলেন, রবিরবাজার ভূমি অফিসের পার্শ্ববর্তী পুকুরটিতে অনেক দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এটি পরিষ্কার করার জন্য স্থানীয় ভূমি অফিসে কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 
পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, পুকুরটি খনন করা গেলে রবিরবাজার ও আশপাশে কোনো অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে পানি সরবরাহ করা যেত। বাজারে ডাস্টবিন নির্মাণ ও পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি। 
রবিরবাজারের ইজারাদার দীপক দে বলেন, নিজস্ব উদ্যোগে বাজারের ময়লা-আবর্জনা অন্যত্র ফেলার ব্যবস্থা করেছেন।  ওই পুকুরে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে তাঁর পক্ষ থেকে বাজারের ব্যবসায়ীদের বারবার নিষেধ করা হয়েছে।
কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, তিনি পুকুরটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এটি খননে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ এলে পুকুরটি দ্রুত খনন করা হবে। পুকুরে ময়লা না ফেলতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প রব রব জ র পর ষ ক র ব যবস য় র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।

আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ