Samakal:
2025-11-03@13:46:17 GMT

ময়লা-আবর্জনায় পুকুর এখন ভাগাড়

Published: 7th, March 2025 GMT

ময়লা-আবর্জনায় পুকুর এখন ভাগাড়

কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারের কাঁচাবাজারসংলগ্ন পুকুরটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পুকুরটিতে। এতে ভরাট হয়ে পুকুরটির অস্তিত্ব বিলীনের পথে। জনগুরুত্বপূর্ণ পুকুরটি খনন ও সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 
জানা গেছে, রবিরবাবাজার এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে দুই হাজারের বেশি দোকানপাট রয়েছে। বাজারের মাঝখানে ২৬ শতাংশ জায়গাজুড়ে পুকুরটির অবস্থান। আগে নানা কাজে স্থানীয়রা পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিনের সুবিধা না থাকায় ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা পুকুরে ফেলতে শুরু করেন। তদারকি না থাকায় বর্তমানে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে পুকুরটি। ময়লা-আবর্জনা থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ও দূষণ ছড়াচ্ছে। 
সরেজমিন দেখা গেছে, পুকুরের পাকা ঘাট পর্যন্ত দখল করে দোকান বসানো হয়েছে। পুকুরের চারপাশের পাড় দোকানপাট দিয়ে ঘেরা। ময়লা-আবর্জনায় পুকুরটিকে একটি বিশাল ভাগাড় বলে মনে হয়। পুকুরটি ভরাট হয়ে বিপুল আগাছা জন্ম নিয়েছে সেখানে। 
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনু মিয়া, আনোয়ার আলী, ইনাম উদ্দিন, ইউসুফ আলী জানান, আগে বাজারের ব্যবসায়ীরা পুকুরে অজু, গোসল ছাড়াও সবজি পরিষ্কার করতেন। বর্তমানে এই পুকুরে কোনো পানিই নেই। আছে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় লোকজন ময়লা-আবর্জনা ফেলে পুকুরটিকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছেন।
রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুক আহমদ বলেন, এটি সরকারি বাজারের পুকুর। বাজারে কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটলে যে পুকুরটি থেকে পানি পাওয়া যেত সেটি এখন ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। পুকুরটি পরিষ্কার করে পুরোনো পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের কাছে কয়েকবার আবেদন জানানো হয়েছে। পুকুরটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
পৃথিমপাশা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব আহমদ বলেন, রবিরবাজার ভূমি অফিসের পার্শ্ববর্তী পুকুরটিতে অনেক দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এটি পরিষ্কার করার জন্য স্থানীয় ভূমি অফিসে কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 
পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, পুকুরটি খনন করা গেলে রবিরবাজার ও আশপাশে কোনো অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে পানি সরবরাহ করা যেত। বাজারে ডাস্টবিন নির্মাণ ও পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি। 
রবিরবাজারের ইজারাদার দীপক দে বলেন, নিজস্ব উদ্যোগে বাজারের ময়লা-আবর্জনা অন্যত্র ফেলার ব্যবস্থা করেছেন।  ওই পুকুরে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে তাঁর পক্ষ থেকে বাজারের ব্যবসায়ীদের বারবার নিষেধ করা হয়েছে।
কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, তিনি পুকুরটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এটি খননে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ এলে পুকুরটি দ্রুত খনন করা হবে। পুকুরে ময়লা না ফেলতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প রব রব জ র পর ষ ক র ব যবস য় র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ