‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা/ খাদ্য কিনিয়ো ক্ষুধার লাগি/ দুটি যদি জোটে অর্ধেকে তার/ ফুল কিনে নিয়ো, হে অনুরাগী!’ কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর কবিতায় ফুলকে ভালোবাসার কথা উল্লেখ করেছেন। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
সেই ফুল নিয়েই ভ্যানকে ভ্রাম্যমাণ নার্সারি বানিয়ে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ইব্রাহীম হোসেন। দিনভর যা বেচাকেনা হয়, তাতে তিনি খুবই খুশি। ইব্রাহীম রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর
ইউনিয়নের বাসিন্দা।
গতকাল শনিবার রাজবাড়ী শহরের কায়েপট্টি এলাকায় ভ্যানভর্তি ফুলের চারা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। ছোট্ট ভ্যানে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারা। এর মধ্যে রয়েছে– কমলা রঙের গাঁদা, সোনালি রঙের গাঁদা, হলুদ রঙের গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, রক্তগাঁদা, টেবিল ফুল, মিনি টগর, গোলাম, ডান্টাজ, ড্রাগন, ক্যাকটাসসহ নানা ধরনের ফুলের চারা। ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম এসব ফুলের চারার। কেউ দেখছেন। কেউ কিনছেন। কেউ এসে পছন্দের ফুলের চারার কথা জিজ্ঞেস করছেন– সেটি আছে কিনা?
ইব্রাহীম হোসেন জানান, তিনি আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। কিন্তু রাজমিস্ত্রির কাজ সব সময় থাকে না। কখনও কখনও বেকার হয়ে দিন কাটাতে হয়। এজন্য ভ্রাম্যমাণ ফুলের নার্সারি করার সিদ্ধান্ত নেন। রাজবাড়ী, বালিয়াকান্দিসহ বিভিন্ন নার্সারিতে গিয়ে চারা কিনে শহর, গ্রাম, গঞ্জে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। দিনে ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকা বিক্রি হয়। এতে যা লাভ হয় তা দিয়ে তার সংসার ভালোই চলে যায়। তাঁর কাছে সব বয়সের মানুষ আসে ফুলের চারা কিনতে। ফুলের প্রতি মানুষের ভালোবাসা দেখে তিনি আনন্দিত। কিছু টাকা জমিয়ে স্থায়ীভাবে একটি নার্সারি করার স্বপ্ন দেখেন তিনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
আজ শ্রাবণের ১৬ তারিখ। প্রকৃতির নিয়মে এ মাসে বৃষ্টি বেশি ঝরে। আজও ঢাকার আকাশ মেঘলা। বুধবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝুম বৃষ্টি কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি। তবে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রয়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বাস, রিকশা ও সাধারণ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শনিবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ এলাকায় এবং অন্যান্য বিভাগে অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার ৬৮ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/ইভা