পবিত্র রমজান মাসে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বিনামূল্যে মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ করবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন। 

রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও, শিশুমেলা, মিরপুর ও কড়াইল বস্তিতে ডিএনসিসি কর্তৃক ৫টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন ভিন্ন রকমের ইফতার দেওয়া হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের। এছাড়া প্রচেষ্টার ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করেও বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে। এই কাজের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে বিনামূল্যে পুরো রমজান মাসের জন্য মহাখালী কমিউনিটি সেন্টারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই সকাল থেকে চলে ইফতার প্রস্তুতের কাজ। 

‘তৃপ্তির রমজান’ শিরোনামের এই ইভেন্টে সহায়তা করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও আজিমুর রোকেয়া রহমান ট্রাস্ট। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ডিএনসিসি একটি উন্নত, মানবিক ও ন্যায্য নগর গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের অনুপ্রেরণাকে সামনে রেখে, ঢাকাকে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাথেও আমরা কাজ করছি।

এছাড়া আজিমুর রোকেয়া রহমান ট্রাস্টের ট্রাস্টি ফাইজা রহমান বলেন, রমজানে সন্ধ্যা নামলেই কারও ঘরে বাহারি ইফতার, কারো ঘরে শুধু পানি আর শুকনো মুড়ি দিয়ে ইফতার হয়। একই দেশে, একই শহরে, একই আকাশের নিচে বাস করা দুইটি শ্রেণির মানুষের খাবারের মাঝে কেন এত পার্থক্য থাকবে? এই আয়োজনে মাসব্যাপী রান্নার জন্য বাবুর্চিসহ সবরকম সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে দিয়েছে আজিমুর রোকেরা রহমান ট্রাস্ট। পাশাপাশি যেসব এলাকায় বুথ বসানো হয়নি সেসব এলাকায় খাবার বিতরণ ও পৌঁছানোর জন্য মোবাইল বুথের (ট্রাক) ব্যবস্থা করা হয়েছে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে।

ইফতার আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে ‘তৃপ্তির রমজানের’ অপারেশন ইনচার্জ অপু বলেন, মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ কর্মসূচিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ জন শিক্ষার্থী প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছে। ৫ম রমজান পর্যন্ত আমরা ৪০০০ মানুষকে ইফতার দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ইফতার মেন্যুতে একেকদিন একেক আইটেম থাকছে। কোনদিন আলুরচপ, বেগুনি, ফল ও ছোলা, মুড়ি, কোনদিন মুরগীর তেহারি, কোনদিন মুরগীর খিচুড়ি আর ডিম, কোনদিন সাদাভাত আর মুরগীর মাংস।

এই আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইকরাম উদ্দিন আবির বলেন, পুরো রমজানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের ইফতার নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। 

বিত্তবান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা জানতে চাইলে প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

আতিকুর রহমান আতিক বলেন, এই আয়োজনে আমরা উন্মুক্ত ডোনেশন সংগ্রহ করছি। একজন মানুষের ইফতারের জন্য মাত্র ৯০ টাকা খরচ হয় আমাদের। কেউ চাইলে আমাদের অর্থ সহায়তা দিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন অথবা নিজেরা বাজার করেও আমাদের মহাখালী কমিউনিটি সেন্টারে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। এখানে প্রতিদিন ২০০০ মানুষের জন্য ইফতার প্রস্তুতের ব্যবস্থা রেখেছি আমরা। 
এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারবেন - ০১৬৭৫৯১৯৯৫১ অথবা ০১৭৯৭৫৯৯৮৫৬ নম্বরে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র ব তরণ ইফত র ব তরণ র ইফত র র জন য ক জ কর ক নদ ন আম দ র রহম ন রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ