কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের প্রায় এক বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে অন্তত পাঁচ হাজার লিচুগাছ রয়েছে। গ্রামের প্রতিটা বাড়ির উঠান, পুকুরপাড়, খেতের আইলসহ চারদিকেই লিচুগাছ। যে কারণে গ্রামটি  ‘লিচু গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

গ্রামের প্রতিটি লিচুগাছ এখন মুকুলে ভরপুর। এসব গাছ ঘিরে মৌ চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খামারিরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মৌমাছির মাধ্যমে লিচু ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে লিচুর উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে মধু আহরণ করে বাড়তি আয় হচ্ছে লিচুচাষি ও মৌচাষিদের।

লিচুবাগানের নিচেই মৌ চাষের ৬০টি বাক্স বসিয়েছেন পাকুন্দিয়ার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের মো.

ছফির উদ্দিন (৩৫)। তিনি শুরুতে ১০টি বাক্স দিয়ে মৌ চাষ শুরু করেছিলেন। এরপর দ্রুত লাভের মুখ দেখায় বাক্সের সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছেন। বর্তমানে তাঁর ৬০টি বাক্স হয়েছে। প্রতিটি বাক্সে মধু সংগ্রহের জন্য আটটি মৌচাক রয়েছে। আছে একটি করে রানি মৌমাছি। তাঁর খামারের নাম ‘মঙ্গলবাড়িয়া মৌ খামার’।

ছফির উদ্দিন বলেন, শুরুতে মৌ চাষের পদ্ধতি বুঝতে অনেক সময় লেগেছে। প্রথমে খুব বেশি লাভ হয়নি। তবে তিনি ধৈর্য ধরে মৌমাছির আচরণ বোঝার চেষ্টা করেছেন। অবশেষে মৌ চাষ করেই তিনি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। ৬০টি বাক্স থেকে তিনি এক টনের ওপর লিচুর মধু সংগ্রহের আশা করছেন। এতে তাঁর চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা আয় হবে বলে জানান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রতিটি লিচুগাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। গাছের নিচে সারিবদ্ধভাবে সাজানো মৌমাছির বাক্স। বাক্সের আশপাশে ভনভন করে শব্দ করে উড়ছে অসংখ্য মৌমাছি। আবার বাক্স থেকে উড়ে এসে লিচুগাছের ফুলে বসছে। এক গাছে থেকে আরেক গাছে উড়ে ফুলের মধু সংগ্রহ করে বাক্সে ফিরছে তারা। লিচুচাষিরাও গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

লিচুগাছের নিচে বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন খামারিরা। রোববার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ