পাকুন্দিয়ার ‘লিচু গ্রামের’ বাগানে বাগানে মৌ চাষে ব্যস্ত খামারিরা
Published: 11th, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের প্রায় এক বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে অন্তত পাঁচ হাজার লিচুগাছ রয়েছে। গ্রামের প্রতিটা বাড়ির উঠান, পুকুরপাড়, খেতের আইলসহ চারদিকেই লিচুগাছ। যে কারণে গ্রামটি ‘লিচু গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
গ্রামের প্রতিটি লিচুগাছ এখন মুকুলে ভরপুর। এসব গাছ ঘিরে মৌ চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খামারিরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মৌমাছির মাধ্যমে লিচু ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে লিচুর উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে মধু আহরণ করে বাড়তি আয় হচ্ছে লিচুচাষি ও মৌচাষিদের।
লিচুবাগানের নিচেই মৌ চাষের ৬০টি বাক্স বসিয়েছেন পাকুন্দিয়ার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের মো.
ছফির উদ্দিন বলেন, শুরুতে মৌ চাষের পদ্ধতি বুঝতে অনেক সময় লেগেছে। প্রথমে খুব বেশি লাভ হয়নি। তবে তিনি ধৈর্য ধরে মৌমাছির আচরণ বোঝার চেষ্টা করেছেন। অবশেষে মৌ চাষ করেই তিনি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। ৬০টি বাক্স থেকে তিনি এক টনের ওপর লিচুর মধু সংগ্রহের আশা করছেন। এতে তাঁর চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা আয় হবে বলে জানান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রতিটি লিচুগাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। গাছের নিচে সারিবদ্ধভাবে সাজানো মৌমাছির বাক্স। বাক্সের আশপাশে ভনভন করে শব্দ করে উড়ছে অসংখ্য মৌমাছি। আবার বাক্স থেকে উড়ে এসে লিচুগাছের ফুলে বসছে। এক গাছে থেকে আরেক গাছে উড়ে ফুলের মধু সংগ্রহ করে বাক্সে ফিরছে তারা। লিচুচাষিরাও গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
লিচুগাছের নিচে বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন খামারিরা। রোববার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে ইলিশ মিলছে কম, চড়া দাম আড়তে
নিষেধাজ্ঞা শেষে দীর্ঘ বিরতির পর আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য আড়ত কেবি বাজার। সাগরে প্রায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে বাগেরহাটের ভৈরবতীরের এ মাছ বাজার।
সাগরে মাছ আহরণ শেষে শুক্রবার ভোরে কেবি বাজার ঘাটে দুটি ট্রলার ভেড়ে। তবে মাছের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫৮ দিনের অবরোধ শেষে সাগর থেকে এই প্রথম দুটি ট্রলার এসেছে। তবে এসব ট্রলারে মাছের পরিমান খুবই কম। ফলে দাম অনেক বেশি।
জেলে রুহুল জানান, তাদের ট্রলার সাগরে যাওয়ার পরে মাত্র কয়েকবার জাল ফেলতে পেরেছেন। এতে অল্প কিছু ইলিশসহ নানা ধরনের মাছ পেয়েছেন। পরে ট্রলারে সমস্যা হওয়ায় চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
শুক্রবার বাজারে ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আধা কেজি থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি এবং এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া রূপচাঁদা আকার ভেদে প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা, কঙ্কন, তুলারডাটি, ঢেলা চ্যালা, ভেটকি, লইট্টা, ছুরি, জাবা, বিড়াল জাবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ একশ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাগর থেকে বেশি করে ট্রলারের আগমন ও মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দাম কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
মোরেলগঞ্জ থেকে মাছ কিনতে আসা তৈয়ব মুন্সি বলেন, সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তিনি বাজারে আসেননি। অনেক দিন পরে আজই বাজারে এসেছেন, তবে দাম অনেক বেশি। তারপরও কিছু মাছ কিনেছেন। বেশি দামে মাছ কিনে এলাকায় বিক্রি করে লোকসানের শঙ্কা জানান তিনি।
কেবি বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর শুক্রবার প্রথমবারে সাগর থেকে ট্রলার এসেছে। জেলেরা তেমন মাছ পায়নি। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পাইকার আসছে। যার কারণে দাম কিছুটা বেশি। সাগরে বেশি পরিমাণ মাছ ধরা পড়লে দাম কিছুটা কমবে বলে জানান তিনি।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত সাগরে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ছিল।