ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডে আজ মঙ্গলবার সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাধারণত বাইরের বিশ্ব গ্রিনল্যান্ডের নির্বাচন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখায় না। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কারণে এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

গ্রিনল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরেই ডেনমার্কের অধীনস্থ একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বীপটির ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে তার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ২০১৯ সালে প্রথমবার গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দেওয়ার পর এবারের নির্বাচনের আগেও তিনি বলেছেন, "জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড আমাদের দরকার। যেকোনো উপায়ে আমরা এটি অর্জন করব।"

গ্রিনল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুট এগেদে ট্রাম্পের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা সম্মানজনক আচরণ পাওয়ার যোগ্য, কিন্তু ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যা করছেন, তা সম্মানজনক নয়।”

এই নির্বাচনে ছয়টি দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গ্রিনল্যান্ডের ৩১ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য ১৬টি আসন প্রয়োজন।

বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে দুই দলের জোট সরকার—বামপন্থী কমিউনিটি অব দ্য পিপল (আইএ) ও ফরোয়ার্ড (এস)। তবে নির্বাচনের ফল কী হবে, তা নিয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো জরিপ নেই।

যে ছয়টি দল নির্বাচনে লড়ছে, তার মধ্যে পাঁচটি গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে। তবে তারা স্বাধীনতা অর্জনের সময়সীমা নিয়ে বিভক্ত। ডেনমার্ক থেকে দ্রুত স্বাধীনতা চায় কিছু দল, আবার কিছু দল দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পক্ষে।

গ্রিনল্যান্ড কৌশলগত অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, দ্বীপটিতে প্রচুর অব্যবহৃত খনিজ সম্পদ রয়েছে, যা বৈশ্বিক শক্তিগুলোর নজর কেড়েছে।

গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত এই নির্বাচন শুধু দ্বীপটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্যই নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। নির্বাচনের ফলাফল আগামীকাল বুধবার সকাল নাগাদ পাওয়া যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ